দেশে এখন
0

মেট্রোরেল-এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধে ভোগান্তিতে রাজধানীবাসী

আবার সেই চিরচেনা যানজটের সাথে দেখা রাজধানীবাসীর। স্বস্তির মেট্রোরেল চালু হতে আরো অন্তত ১ বছর সময় লাগবে। অন্যদিকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু হবে কবে- হয়নি তারও সিদ্ধান্ত। বিশেষজ্ঞরা বলছে, রাজধানীতে যানজটে প্রতিদিন প্রায় ১৫০ কোটি টাকার ক্ষতি গুণছে বাংলাদেশ। সাথে স্বাস্থ্যক্ষতি আর জ্বালানির অপচয় তো আছেই।

ঠিক সময়ে অফিস ধরার তারা নেই, অফিসগামী যাত্রীদের চাপও নেই। শুনশান নিরব হয়ে পড়ে আছে মেট্রোরেল। ঠিক কয়েকদিন আগেও উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত আসতে মেট্রোরেলের সময় লাগতো মাত্র ৩০ মিনিট। বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে এখন রাস্তয় আসতে কতক্ষন সময় লাগে।

পথে পথে হাজারও মানুষ দাঁড়িয়ে থাকে বাসের অপেক্ষায়। গণপরিবহনের কোনো বাস পেলেই হুমড়ে পড়ছে ওঠার জন্য। অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে বাসে ওঠার চেষ্টাও ব্যর্থ হচ্ছে অধিকাংশ সময়।

একজন যাত্রী বলেন, 'অনেক সময় দাঁড়িয়ে থাকার পর বাস আসলো, তারপর উঠলাম। এখন তো রাস্তায় জ্যাম আছে। মেট্রোরেল দিয়ে যেতে তো সময় লাগতো না। মানুষের অনেক সমস্যা হচ্ছে।'

যারা বাসে উঠতে পারছেন, তাদেরও গন্তব্যের বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে অন্তত ১০ থেকে ৩০ মিনিট পর্যন্ত।

মেট্রোরেলের স্বস্তি ভুলে এরইমধ্যেই দুর্ভোগের সাথে মানিয়ে নিতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষ। তবে আক্ষেপ চোখে মুখে।

একজন বাসচালক বলেন, 'মেট্রো বন্ধ হওয়ার পর থেকে মোটামুটি অফিস টাইমে জ্যাম থাকে। তারপর আর থাকে না। কী যেন একটা আতঙ্কে পাবলিক ঘর থেকে বের হয় না। কেমন যেন একটা ভয় লাগে।'

দুর্বৃত্তের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসও। র‍্যাম্পের মুখে থাকা দু'টি টোল প্লাজা পুড়িয়ে দেয়ায় বন্ধ আছে সেটিও। বিজয় সরণি থেকে যানজট এড়িয়ে এয়ারপোর্টে ১০ মিনিটে যাওয়ার স্বস্তি পরিণত হয়েছে দুর্ভোগে।

একজন যাত্রী বলেন, 'নিচে তো অনেক জ্যাম। এলিভেটেড খোলা থাকলে জ্যাম কম হতো।'

মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসের ক্ষতি হওয়া অংশ বাদ দিয়ে চালু করা যায় কি না ? এমন প্রশ্নের এখনও উত্তর নেই কর্তৃপক্ষের কাছে। শুধু জানে বিদেশি কোম্পানিগুলো ক্ষত সারিয়ে তোলার জন্য কথা হচ্ছে।

সেতু মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মনজুর হোসেন বলেন , 'আসলে এটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ প্রকল্প। এখানকার ইনভেস্টর যারা রয়েছেন তারা বাইরের। এখানকার বনানি ও মহাখালীর দু'টো টোল প্লাজাই আগুনে পুড়ে গিয়েছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের তারা বলেছে প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এটা কীভাবে চালু করা যায়। একটা বিকল্প পদ্ধতিতে চালু করার বিষয়ের সিদ্ধান্তটা তাদের কাছ থেকেও আসতে হবে।'

হুট করে অতিরিক্ত যানজটের চাপে হিমশিম অবস্থা হয়েছে ঢাকা ট্র্যাফিক বিভাগের। প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল জনশক্তির দিয়ে চলছে যানজট মুক্তির লড়াই।

ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মনিবুর রহমান বলেন, 'অফিস টাইম করার থাকার জন্য যে পরিমাণ গাড়ি আশা কররা হয়েছিল, সে পরিমাণ গাড়ি থাকার পরও কিন্তু ট্র্যাফিক ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাপনার জন্য আমরা সেটি ঠিক করতে পেরেছি।'

যানজটে পরোক্ষ ক্ষতির সেই আগের হিসেবে চলে গেছে বাংলাদেশ। কাজের জন্য বের হওয়া রাজধানীবাসির দিনের অধিকাংশ সময় অপচয় হচ্ছে রাস্তায়। দিনের ক্ষতির প্রাথমিক হিসেব বেড়েছে আগের থেকে বেড়েছে বলে জানিয়েছেন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা ।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ সাইফুন নেওয়াজ বলে, 'যানজটের কারণে বছরে আর্থিক ক্ষতি হয় প্রায় শত হাজার কোটি টাকার। শুধু তাই না, অনেক কর্মঘণ্টা নষ্ট করে আবার জ্বালানিরও অপচয় হয়।'

দুর্ভোগের যানজটের দ্রুত সমাধান চায় রাজধানীবাসী। তাদের আহবান মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসের ক্ষত দ্রুত সারিয়ে সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার।

এসএস