বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে মাঠে নেমেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। আজ (শুক্রবার, ২ আগস্ট) সকাল থেকে রাজধানীর মোড়ে মোড়ে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা।
নিহত শিক্ষার্থীদের স্মরণে প্রার্থনা ও ছাত্র জনতার গণমিছিল কর্মসূচির ডাকে চলে মানববন্ধনসহ প্রতিবাদের নানা আয়োজন। হাজারও কণ্ঠে প্রতিধ্বনিত হয় হামলা, মামলা ও শিক্ষার্থী হয়রানির বিরুদ্ধে নানা স্লোগান। ৯ দফা দাবি আদায়ে সোচ্চার সবাই।
মানববন্ধনে থাকা একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘কোটা সংস্কারের দাবি মেনে নেয়ার পরও আমরা রাস্তায় কেন, সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আমাদের রাজউকের শিক্ষার্থী স্বপ্ন আমাদের সঙ্গে গত ১৮ জুলাই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিল। তার মাথায় জাতীয় পতাকা ছিল। পতাকাধারী একজন ছাত্র কীভাবে অপরাধী হয় এটাই আমাদের প্রশ্ন।’
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের কর্মসূচিতে আসার ক্ষেত্রে অন্যতম কথা ছিল আমরা ইউনিফর্ম পরে আসবো। আমাদের প্রধান পরিচয় আমরা ছাত্র। আমরা ভয় পেয়েছি আমাদের রাস্তায় ধরা হবে। আমাদের পরিচয় ছাত্র প্রকাশ হলে কারাগারে যেতে হতে পারে।’
মার্চ ফর জাস্টিস কর্মসূচি নিয়ে মানববন্ধন করেন রাজধানীর রাজউক কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা। আটক হওয়া শিক্ষার্থীদের মুক্তি না দেয়া পর্যন্ত কোন পরীক্ষায় অংশ না নেয়ার ঘোষণা দেন তারা। একসঙ্গে শিক্ষার্থীদের পুলিশি হয়রানি বন্ধেরও দাবি জানান তারা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, রাত ৩টার সময় আমাদেরকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়। মোবাইল থেকে আন্দোলনের ছবি ডিলিট করে বাসা থেকে বের হতে হয়। আইনমন্ত্রী বারবার বলছে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো মিথ্যা মামলা দেওয়া হবে না। আর মিথ্যা মামলাগুলোও প্রত্যাহার করবে। কিন্তু তিনি তার কথা রাখতে পারেননি। আমাদের নিরাপত্তা কোথায়?
একই দাবিতে গণমিছিলে করে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ও ইস্ট-ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে অবস্থান নেন তারা। পরে গণমিছিল বের করেন। রামপুরা ব্রিজ হয়ে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয় মিছিল। এ সময় ৯ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ঘরে না ফেরার কথা জানান তারা।
প্রতিবাদের ভাষা ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীর বাইরেও। বৃষ্টি উপেক্ষা করে মাঠে নামেন রংপুর ও পিরোজপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলার কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনসহ বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন তারা।
এসময় কোটা সংস্কার আন্দোলনে আবু সাঈদসহ সারাদেশে নিহত শিক্ষার্থীদের হত্যার বিচার দাবি করে বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা। একই সঙ্গে সারাদেশে হামলা, মামলা ও শিক্ষার্থী হয়রানি বন্ধের দাবি জানানো হয়।