পাটের রাজধানী হিসেবে পরিচিত ফরিদপুর। জেলার চাষযোগ্য জমির প্রায় ৭৫ ভাগ জমিতে চলতি মৌসুমে পাটের আবাদ করেছেন কৃষকরা। যার সাথে জড়িত অন্তত ২ লক্ষাধিক কৃষক। আবহাওয়া ও মাটির গুণগতমানের কারণে এখানে উৎপাদিত সোনালি আঁশ দেশসেরা।
তবে, এবার তীব্র তাপদাহ ও সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় পাটের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়েছে, শুকিয়ে গেছে গাছের কাণ্ড। এতে অনেকেই বাধ্য হয়ে কেটে ফেলেন অপরিপক্ব পাটের গাছ। যারা কৃত্রিম উপায়ে সেচ দিয়েছেন তারাও এখন পানির অভাবে পাট জাগ দেয়া নিয়ে বিপাকে। এতে পাটের রং ও মান ধরে রাখা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।
কৃষকদের একজন বলেন, ‘যে পানি আসছে খালে তাতে পাট ঝাক ও ধোয়া আমাদের জন্য কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে পাটের রং কালো হয়ে যাচ্ছে।’
ফরিদপুরে বিঘাপ্রতি ১৩ থেকে ১৫ মণ পাট উৎপাদন হলেও এবার তা অর্ধেকে নেমে আসার শঙ্কা। এছাড়াও চৈত্র মাসে বীজ বপনের পর থেকেই দিতে হয়েছে অতিরিক্ত সেচ। এতে কৃষকের খরচ বেড়েছে অন্য যেকোনো মৌসুমের তুলনায় কয়েকগুণ। সাথে বেড়েছে সার, বীজ, কীটনাশক ও শ্রমিকের খরচ। তাই ব্যয় বাড়ার বিষয়টি আমলে নিয়ে পাটের ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ করার দাবি কৃষকদের।
কৃষকদের আরেকজন বলেন, ‘বৃষ্টির পানি না থাকায় পাটের কালার নেই তেমন। সোনালি কালার আসছে না পাটে। খরচ এবার বেশি হয়েছে বেশি সেচ দেয়ার কারণে।’
প্রাকৃতিক কারণে পাটের উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হলেও কৃষকরা আশানুরূপ দাম পাবেন বলে আশা কৃষি বিভাগের। এছাড়া কৃষকের উৎপাদন খরচ অনুযায়ী যেন দাম নিশ্চিত হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার কথাও জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বছরের শুরুতে সরকার পাট ক্রয় করলে কৃষক ন্যায্য মূল্য পায়।’
চলতি মৌসুমে ফরিদপুর জেলায় ৮৬ হাজার ৫২৪ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। যেখান থেকে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ১৮ হাজার ৯শ' ৫ টন। আর গেলো মৌসুমে জেলায় ৮৪ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে পাটের চাষ হয়।