ভরা মৌসুমে বাজারে আম্রপালির সরবরাহ অনেক। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। ভোরে বাগান থেকে আম নামিয়ে আড়তে আসেন চাষিরা। প্রতিদিন সাপাহার উপজেলা পরিষদের গেট থেকে পত্নীতলা সড়ক পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসে এই আমের হাট।
কয়েক বছর আগেও ফজলি, হিমসাগর, ল্যাংড়া ও গোপালভোগ ছিল জনপ্রিয়তার শীর্ষে। এখন সেই জনপ্রিয়তার অনেকটাই দখল করেছে আম্রপালি। এছাড়া এই আম সহজে নষ্ট না হওয়ায় মৌসুমে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত পাওয়া যায়। বর্তমানে জেলার ৬০ শতাংশ বাগানে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে এই আম।
মৌসুমের শুরু থেকে অনাবৃষ্টি ও খরায় ফলন কম হয়। তবে আমের আকার তুলনামূলক বড় ও ভালো দাম পাওয়ায় খুশি চাষিরা।
এক চাষি বলেন, 'গত বছরের তুলনায় আমের দাম একটু ভালো। পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা বেশি পাচ্ছি।'
যোগাযোগব্যবস্থা ভালো হওয়ায় উপজেলাটিতে গড়ে উঠেছে ৩০০ এর বেশি আমের আড়ত। এখানকার আম স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায়। তবে কৃষকদের অভিযোগ ৪০ মণের বদলে ৫০-৫২ কেজিতে মণ ধরে এখানকার ব্যবসায়ীরা। রয়েছে ইচ্ছামতো দাম কেনার অভিযোগও।
সাপাহার আড়তদার সমিতির সভাপতি কার্তিক সাহা বলেন, 'সরকারিভাবে ৪৮ কেজি ঘোষণা দেওয়া আছে। তাই আমরা ৪৮ কেজিতেই নিতে চাচ্ছি। কিন্তু কৃষক আম বেছে না দেওয়ার কারণে বর্তমানে আমরা ক্যারেটসহ ৫০ কেজি নিচ্ছি।'
এ বছর জেলায় ৩০ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আম বাগান করা হয়েছে। যেখান থেকে প্রায় ৪ লাখ ৩১ হাজার টন আম উৎপাদনের আশা কৃষি বিভাগের। যার ৬০ ভাগই আম্রপালি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, 'যেকোনো জেলার আম্রপালির তুলনায় এখানের আম স্বাদ ও মানে কিছুটা ভিন্ন। সাপাহারের আম সারাদেশে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে।'
সবমিলিয়ে জেলায় প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকার আম বেচাকেনা হচ্ছে। মৌসুম শেষে যা আড়াই হাজার কোটি টাকা ছাড়াবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।