সিলেটে সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি কিছুটা কমলেও কমেনি দুর্ভোগ। পানিতে ডুবে আছে নিম্নাঞ্চলের বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট। যোগাযোগের একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে নৌকা। কেউ কেউ আবার বন্যার পানি উপেক্ষা করেই বের হচ্ছেন জীবিকার তাগিদে।
জেলার ১৩টি উপজেলার বেশিরভাগ নিম্নাঞ্চলই প্লাবিত। বন্যার কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এই মৌসুমে টানা তৃতীয়বারের মতো বন্যার প্রভাব কাটিয়ে আবারও স্বাভাবিক জীবনে ফেরার অপেক্ষায় আছে পানিবন্দীরা।
স্থানীয় একজন বলেন, 'পানির কারণে আমরা খুব দুর্ভোগে আছি। বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারি না। বাড়িঘরে পানি উঠে গেছে। খুব কষ্টের মধ্যে দিন যাচ্ছে আমাদের।'
পাহাড়ি ঢল কমায় সুনমাগঞ্জের সুরমা, কুশিয়ারা ও যাদুকাটা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। এতে কিছুটা উন্নতি হয়েছে সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির। পৌর শহরের রাস্তাঘাট থেকেও নেমে গেছে পানি। তবে তলিয়ে আছে নিম্নাঞ্চলের গ্রামীণ সড়ক ও কিছু ঘরবাড়ি। এছাড়া জেলা শহরের সাথে তাহিরপুর উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে রয়েছে ২ লাখেরও বেশি মানুষ।
হবিগঞ্জেও কমতে শুরু করেছে নদ-নদীর পানি। খোয়াই নদীর পানি বাল্লা পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। নবীগঞ্জের দিঘলবাগে নদীর বাঁধ না থাকায় লোকালয়ে প্রবেশ করছে পানি।
তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বন্যার পানিতে তলিয়ে রয়েছে মৌলভীবাজারের নিম্নাঞ্চলসহ পৌর এলাকার বাড়িঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও রাস্তাঘাট। আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন বানভাসীরা। দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে স্যানিটেশন, শিশু খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। বন্ধ রয়েছে ২১৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
ফেনীতে মুহুরী ও কহুয়া নদীর বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্রবেশ করছে পানি। ভেসেছে পুকুর ও মাছের ঘের। তলিয়ে গেছে আমন ধানের বীজতলা ও গ্রীষ্মকালীন সবজির ক্ষেত।
বন্যার্তদের জন্য ২ হাজার ব্যাগ শুকনো খাবার, ২০০ টন চাল ও ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। তবে ত্রাণ নয়, নদী রক্ষা বাঁধের স্থায়ী সমাধান চান স্থানীয়রা।
এদিকে, কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমার নদের পানি বিভিন্ন পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে কয়েকশ' পরিবার।