সময় যত যাচ্ছে ততই ভয়াবহ হচ্ছে ভাটির জেলা সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি। ধীরে ধীরে তলিয়ে যাচ্ছে সীমান্তবর্তী উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো। সেই সাথে পানি ঢুকতে শুরু করছে শহরে। তলিয়ে যাচ্ছে রাস্তাঘাট।
গত চারদিন ধরে সুনামগঞ্জে মুষল ধারে বৃষ্টি হচ্ছে। সেই সাথে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় নামছে পাহাড়ি ঢল। এতে জেলার সকল নদ নদীর পানি ইতোমধ্যে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ।
দোয়ারাবাজারের লক্ষীপুর, রসরাই, সুলতানপুর, হাছনবাহারসহ ৫টি গ্রাম পাহাড়ি ঢলের পানিতে মুহূর্তেই তলিয়ে গেছে। পানির নিচে চলে গেছে ঘরবাড়ি, পুকুর, গোলায় থাকা ধান-চালসহ যাবতীয় আসবাবপত্র। সেই সাথে সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক, জগন্নাথপুর, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর ও মধ্যনগরসহ আরও ৬ উপজেলার নিম্নাঞ্চল উজানের ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে। নিম্নাঞ্চলের সকল টিউবওয়েল তলিয়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট।
এদিকে গত ৪দিন ধরে সুনামগঞ্জ জেলা শহরের সাথে তাহিরপুর উপজেলার সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। পাশাপাশি ছাতক, দোয়ারা বাজার, জগন্নাথপুরসহ কয়েকটি উপজেলার সাথে দুর্গম এলাকার ৪০টিরও বেশি গ্রামে সড়ক যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
বন্যা কবলিতরা বলেন, পানির কারণে আমরা ঘরে থাকতে পারছি না। রাস্তায় রাত কাটাচ্ছি। টিউবওয়েলগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। এখন আমরা বিশুদ্ধ পানির সংকটে আছি। আমাদের যাওয়ার কোনো জায়গা নাই।
বন্যা মোকাবেলার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক রাশেদ ইকবাল চৌধুরী।
তিনি বলেন, 'আমরা আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছি এবং মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। স্থানীয় বাজার কমিটি ও দোকান মালিকদের সঙ্গে কথা বলেছি যেন স্থানীয়ভাবে আমরা শুকনো খাবারগুলো তৈরি করতে পারি।'
পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের অঞ্চল চেরাপুঞ্জি সুনামগঞ্জের উত্তর প্রান্ত থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। তাই বন্যা পরিস্থিতি অবনতির শঙ্কা রয়েছে।