দেশে এখন
0

চট্টগ্রামে বছরে ৬০০ কোটি টাকার নকল স্ট্যাম্প তৈরি

বিলের মাঝখানে কয়েক রুমের সেমিপাকা ঘর, সেখানেই রীতিমতো কারখানা বানিয়ে বছরে ৬০০ কোটি টাকার সিগারেটের নকল স্ট্যাম্প তৈরি করতো একটি চক্র। যা বিক্রি হতো দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সিগারেট কোম্পানির কাছে। পুলিশ জানায়, সরকারি রাজস্বের এ স্ট্যাম্প শুধুমাত্র গাজীপুরে টাকশালে তৈরি হবার কথা। তবে এই চক্রের দীর্ঘদিনের অপকর্ম বিপুল অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল সরকার।

চট্টগ্রামের চাঁন্দগাও থানাধীন পাক্কা দোকান এলাকায় কিছুটা নিরিবিলি ও গ্রামীণ পরিবেশ পেরিয়ে বড় বিল। মাঝখানে কয়েক রুমের সেমিপাকা ঘর। যাতাযাতের জন্য নেই সড়কও। তবে সেখানেই কয়েকটি প্রিন্টিং মেশিনসহ স্ট্যাম্প তৈরির নানা উপকরণ।

তিনটি ধাপে এ প্রিন্টিং মেশিন পেরিয়ে তৈরি হতো সিগারেটের জাল স্ট্যাম্প বা ব্রান্ড রোল। পুলিশ জানায়, ৫ শ্রমিক মিলে মাত্র তিন দিনে ৮ লাখ জাল স্ট্যাম্প ছাপিয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা। বছরে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার নকল ট্যাম্প তৈরি হতো এ কারখানায়। যা শুধুমাত্র গাজীপুর সরকারি টাকশালে তৈরি হবার কথা। এতে করে বড় অংকের রাজস্ব হারাচ্ছিল সরকার।

দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সিগারেট কোম্পানি এসব স্ট্যাম্প কম মূল্যে কিনে প্যাকেটে লাগিয়ে দিতো। আজ (বৃহস্পতিবার, ১৬ মে) স্ট্যাম্প তৈরির এমন কারখানার সন্ধান পায় গোয়েন্দা পুলিশ। পরে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয় ৫ জনকে। সিলগালা করা হয় কারখানা।

সিএমপির এডিসি সাব্বির আহমদ বলেন, 'বছরে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার মতো সক্ষমতা তাদের ছিল। আমরা যদি ৭৪ শতাংশ ট্যাক্স হিসাব করি তাহলে প্রায় ৫ কোটি টাকার ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার জাল স্ট্যাম্প আমরা উদ্ধার করেছি।'

আটককৃতরা জানান, এ ঘটনায় সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা বড় একটি চক্র জড়িত। কারখানা মালিকের নির্দেশে তারা বিভিন্ন সময় অচেনা লোকজনের কাছে এ স্টাম্প সরবরাহ করতো।

একজন আটককৃত বলেন, 'পণ্য যখন রেডি হয় তখন পণ্যের জন্য ২ জন লোক আসে। আমি শুধু দোকান থেকে বের করে দেই, এটাই আমার কাজ।'

সিগারটের প্যাকেটের গায়ে নকল স্ট্যাম্প কি না তা খুব একটা পরীক্ষা করা হয়না। এ নিয়ে অভিযানও চালায় না সরকারি কোনো সংস্থা, সেই সুযোগই নিয়েছে এ চক্রটি।

এসএস