দেশে এখন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভায় বর্জ্যের ভোগান্তি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভায় জায়গার অভাবে ডাম্পিং স্টেশনে বর্জ্য অপসারণ করা যাচ্ছে না। নেই প্লাস্টিক ও মেডিকেল বর্জ্য রিসাইক্লিংয়ের ব্যবস্থা। এ অবস্থায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। নদী-খালে বর্জ্য ফেলায় হুমকিতে প্রাণিকুলও।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরশহরে প্রতিদিন প্রায় দেড়শটন বর্জ্য উৎপাদন হয়। যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এরমধ্যে কেবল ১শ' থেকে ১শ' ২০ টন বর্জ্য অপসারণের সক্ষমতা আছে পৌর কর্তৃপক্ষের। বাকি বর্জ্য স্তূপ করে রাখা হয় সড়কের পাশে, বাসাবাড়ির সামনে। মূলত ডাম্পিং স্টেশনে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় প্রতিদিন উৎপাদিত বর্জ্য ডাম্পিং সম্ভব হচ্ছে না।

শহরের ছয়বাড়িয়ায় ১.৩ একর জায়গায় অবস্থিত পৌরসভার ডাম্পিং স্টেশনটিতে নেই রিসাইকেলের ব্যবস্থাও। অন্যসব বর্জ্যের মতোই প্লাস্টিক ও মেডিকেল বর্জ্য ডাম্পিং হয় এখানে। যা পরিবেশের জন্য ক্ষতির কারণ। এছাড়া ভেতরে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় ডাম্পিং স্টেশনের সামনে সড়কের পাশে স্তূপ করেও রাখা হচ্ছে। এতে স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীদের চলাচলে বাড়ছে দুর্ভোগ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের একজন বলেন, 'দুর্গন্ধ, মাছি ও মশার জন্য থাকতে পারি না। খুব সমস্যা হচ্ছে।'

বিপুল এই বর্জ্য অপসারণে হিমশিম খাওয়া পৌর কর্তৃপক্ষ শহরে জায়গা না পেয়ে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের পাশেও ফেলছে বর্জ্য। এছাড়া একটি অংশ ফেলা হয় তিতাস নদী ও টাউন খালে। এতে নদীতে দূষণ বেড়ে প্রায়ই মাছের মড়ক দেখা দেয়। তাই নদী ও খাল বাঁচাতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নের দাবি বিশিষ্টজনদের।

তরী বাংলাদেশের সভাপতি শামীম আহমেদ বলেন, 'তিতাস নদীর পানি মানুষ আগে পান করতো এখন পান তো দূরের কথা গোসল করতেও সমস্যা। মাছ মারা যাচ্ছে। তিতাস নদীকে রক্ষা করতে না পারলে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে রক্ষা করা যাবে না।'

এদিকে, বর্জ্য থেকে জৈব সার ও পলিথিন থেকে ডিজেল উৎপাদনে ২০২৩ সালের মার্চে ২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্লান্টের উদ্বোধন করা হলেও সেটি কাজে আসছে না। উদ্বোধনের এক বছর পেরুলেও সার উৎপাদন করা যায়নি প্ল্যান্ট থেকে। এছাড়া চাহিদা কম থাকায় ডিজেল উৎপাদনও অনিয়মিত। পাশাপাশি অন্ধকারেই রয়ে গেছে বর্জ্য থেকে ১২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্পটি।

পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, ডাম্পিং স্টেশনের জন্য জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া উৎপাদন খরচ বাড়ায় জৈব সার ও ডিজেল উৎপাদনে কোনো প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসছে না। আর জায়গা না পাওয়ায় চালু করা যাচ্ছে না বিদ্যুৎ প্লান্ট।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল কুদ্দুস বলেন, 'নতুন করে ডাম্পিং স্টেশন নেয়ার জন্য আমরা পৌর কর্তৃপক্ষ আলোচনা করেছি।'

দেড়শ বছরেরও বেশি পুরনো ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভায় সঠিকভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ভোগান্তি কমবে, প্রত্যাশা বাসিন্দাদের।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর