দেশে এখন
প্রত্যাশিত ইলিশ মিলছে না জালে
জাটকা রক্ষায় দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে ইলিশ শিকারে নদীতে নেমেছেন ভোলার জেলেরা। তবে অব্যাহত তাপপ্রবাহ আর অনাবৃষ্টিতে জেলেদের সেই স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। তাঁদের জালে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত মাছের দেখা। কিভাবে সংসার আর ঋণের কিস্তি পরিশোধ করবে তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তার ভাঁজ জেলেদের কপালে।

দু'মাস পর এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলছে মাছ শিকার। কিন্তু অল্প কিছু ইলিশ নিয়ে ঘাটে ফিরতে হচ্ছে তাদের। ঘাটে নৌকা বেঁধে জাল সেলাইসহ অন্যান্য কাজ করে সময় পার করছেন জেলেরা। এতে মহাজনের ঋণ পরিশোধ তো দূরের কথা, ট্রলারের তেলের টাকাও উঠাতে পারছে না তারা।

একজন জেলে বলেন, 'অভিযানের পর মাছ বেশি হওয়ার কথা। কিন্তু সে পরিমাণ মাছ নদীতে নেই। আমাদের জেলের একেকজনের ১ থেকে দেড় লাখ টাকা ধার নেওয়া হয়েছে। সপ্তাতে ২ হাজার টাকা কিস্তি।'

ভোলার মেঘনা পাড়ের অর্ধশতাধিক ছোট বড় মাছঘাট এই সময় জেলে ও আড়ৎদারদের হাঁকডাকে মুখরিত থাকালেও এখন সেখানে অনেকটা শুনশান নিরবতা। আড়তে মাছের বাক্সগুলো খাঁ খাঁ করছে। ঘাটে বসে অলস সময় পার করছেন আড়ৎদাররা। দু'এক ঝুড়ি মাছ ঘাটে আনা হলেও আগের মতো নেই ব্যস্ততা।

একজন আড়ৎদার বলেন, 'আমরা যারা মাছ ব্যবসায়ী আছি, আমরা মোকামে পরিমাণ মতো মাছ পাঠাতে পারছি না। এতে আমরা অনেকটা ক্ষতির মধ্যে আছি।'

মৎস্য বিভাগ বলছে, তীব্র তাপদাহ আর একটানা বৃষ্টিপাত না হওয়ায় নদীর পানি গরম হওয়ার পাশাপাশি লবণাক্ততাও বেড়েছে। এতে করে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ গভীর জলাশয়ের খোঁজে সাগরমুখী হচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলে কিছুদিনের মধ্যেই জেলের জালে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ ধরা পড়বে বলছেন মৎস্য কর্মকর্তা।

ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, 'আমাদের এখন আপ স্টিমের ফ্লোটা কম হওয়ার কারণে পানিটা তুলনামূলক পলিগুলোর কাছাকাছি থিতু হওয়ার কারণে ইলিশের যে মাইগ্রেটিভ রুট টা, সেটার অনেক জায়গায় এখন ভরে যাচ্ছে। যার জন্য একটিভ মাইগ্রেটিভ রুট, যার জন্য গভীর পানির প্রয়োজন হয়, সেটা কমে যাওয়ার কারণে। ইলিশের মাইগ্রেশনের পরিমাণ কমে যাচ্ছে।'

চলতি বছর জেলায় ১ লাখ ৯২ হাজার টন ইলিশ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার বাজারমূল্য প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা।

এমএসআরএস