দেশে এখন

বদলে যাচ্ছে বগুড়ার করতোয়া নদী ও সুবিল খাল

অবশেষে ৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে শুরু হয়েছে বগুড়ার করতোয়া নদী ও সুবিল খালের খনন কাজ। সৌন্দর্য্য বাড়াতে নদী তীরে স্লোপ প্রটেকশনসহ নির্মাণ হবে ওয়াকওয়ে। যদিও দখলদারদের উচ্ছেদ না করে নদীর প্রবাহ কতটুকু ফিরবে তা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। তবে একরত্তিও ছাড় না দেওয়ার হুঁশিয়ারি জেলা প্রশাসনের।

করতোয়ার পলিমাটিতেই শুরু হয়েছিল আজকের বগুড়ার নির্মাণ পর্ব। অবশেষে বদলে যাচ্ছে বগুড়ার ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাথে জড়িয়ে থাকা সেই করতোয়া নদী ও সুবিল খাল। বণিকের জাহাজ ভিড়ুক আর না ভিড়ুক। ছলাৎ ছলাৎ শব্দ তুলে আবারো ভাটিয়ালী সুর ধরবে নৌকার মাঝি। বুক ভরে নির্মল শ্বাস নেবে করতোয়া পাড়ের বাসিন্দারা। ছবির মতো করে সুবিল আর করতোয়াকে সাজানোর সেই ব্যবস্থাটাই করতে যাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, '৭৩০ মিটার স্লোপ প্রটেকশন কাজ, সেই সঙ্গে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে ও সৌন্দর্যবর্ধন করা হবে। এর সাথে ২৭ কিলোমিটার সুবিল খাল খনন করা হবে।'

করতোয়ার ১২৩ কিলোমিটারের মধ্যে ১৭ কিলোমিটার আর সুবিল ও অটো খালের ২৭ কিলোমিটার অংশ খননে এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৭ কোটি ১৩ লাখ টাকা।

তবে দখল-দূষণের মধ্যদিয়ে করতোয়া ও সুবিল খালকে প্রতিনিয়ত যারা হত্যা করছে, সেই দখলদারদের উচ্ছেদ না করে কতটুকু প্রবাহ ফিরবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে স্থানীয়দের।

স্থানীয় একজন বলেন, 'বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বিল্ডিং এবং বিভিন্ন ব্যক্তি যারা এই করতোয়াকে দখল করেছিল, সেগুলো মুক্ত না করে সেগুলো অপসারণ না করে এই করতোয়া নদীর কীভাবে নাব্যতা ফিরে আসবে এটা আমাদের জনগণের পক্ষ থেকে প্রশ্ন রইলো।'

গত বছরের মার্চ মাসে সদরের নওদাপাড়া এলাকায় নদী দখলের অভিযোগে বেসরকারি সংগঠন টিএমএসএসের কর্মকর্তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদন্ড দিয়ে তোপের মুখে পড়েন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজা পারভীন। টিএমএসএসের মতো যারা নদী দখলে রেখেছেন তারা এখনো বহাল তবিয়তে। যদিও সেসময় দখলের কথা অস্বীকার করেছিলো সংস্থাটি। তবে জেলা প্রশাসক বলছেন, এক রত্তিও ছাড় পাবেন না দখলদাররা।

বগুড়া টিএমএসএসের নির্বাহী পরিচালক হোসনে আরা বেগম, 'আমারেদকে ক্ষতিগ্রস্থ করা হচ্ছে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। আমাদের জমির সীমানা নির্দিষ্ট না করার ফলে যেটা আমাদের জমি সেটাকে নদী বলা হচ্ছে। আবার নদীর জমিতে যারা পায়ে চলার পথ সৃষ্টি করছে তাদের দায়টা আমাদের ওপর দেওয়া হচ্ছে।

বগুড়ার জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, 'যে জায়গায় পানির ফ্লো থাকবে সে জায়গাকে নদী হিসেবে চিহ্নত করতে হবে। এই সামগ্রিক বিষয় বিবেচনা করে আমাদের ১৪ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি যেভাবে সীমানা চিহ্নিত করবেন সেভাবেই নদীর ড্রেজিং কার্যক্রম পরিচালিত হবে।'

৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে চলমান প্রকল্পের কাজ শেষ হবে আগামী বছরের জুনে। এদিকে করতোয়া নদীর ১২৩ কিলোমিটারসহ ইছামতি ও গজারিয়া খননে প্রস্তাবিত প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার মেগা প্রকল্পটি ওখনো ঝুলে আছে অনুমোদনের অপেক্ষায়।

এমএসআরএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর