ফেনী নদীর ছাগলনাইয়ার শুভপুর ও লাঙ্গলমোড়া এলাকার বিস্তীর্ণ মাঠে উৎপাদন হয় তরমুজ, ডাল, শসা, কুমড়োসহ নানা রকম সবজি। এসব কৃষিপণ্য উৎপাদন করে জীবিকা নির্বাহ করে হাজারো মানুষ। কিন্তু নদী ভাঙনে ক্রমাগত বিলীন হচ্ছে এসব জমি।
গেল তিনবছরে প্রায় ২ হাজার একর কৃষি জমি চলে গেছে নদীগর্ভে। ফসল উৎপাদন বন্ধসহ সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব নদীপাড়ের মানুষ।
স্থানীয়ারা বলেন, 'আমাদের জমিগুলো বালু কেটে নদীগর্ভে নিয়ে গেছে। নদী আমাদের জমি থেকে অনেক দূরে ছিল।'
আরেকজন বলেন, 'আমরা এখানে চাষবাদ করে খেতাম। কিন্তু এখন বালু কেটে জমিগুলো নিয়ে যাচ্ছে।'
অব্যাহত এই ভাঙনে শুভপুরে ফেনী নদীর আকারও বদলে যাচ্ছে। পাশাপাশি ইজারাদারদের অনিয়ন্ত্রিত বালু উত্তোলনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষক, আশ্রয়ণ প্রকল্প ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেচ প্রকল্প।
বেপোরোয়া বালু উত্তোলনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের উন্নয়নে নেয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৬৭২ কোটি টাকার প্রকল্প। এবিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে পাউবো। ইজারা দেয়া জায়গার বাইরে বালু তুললে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান জেলা প্রশাসন ।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.রাশেদ শাহরিয়ার বলেন, 'যদি নদী তীরবর্তী জমির ক্ষয়ক্ষতির স্বীকার হয় এবং নদী পারের কোনো ক্ষতি হয় সেক্ষেত্রে পাউবো আইনি পদক্ষেপ নিবে।'
ফেনীর জেলা প্রশাসক মুসাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, 'অনেকে বালু তুলতেছিলেন এমন অভিযোগ পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছি। এরমধ্যে আমরা মোবাইল কোর্ট করে জরিমানা করেছি।'
অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের আশ্বাস ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্যের।
ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম বলেন, 'বালু উত্তোলন কিভাবে চলমান রাখা যায় তা প্রশাসন দেখবে কিন্তু কোনো অবস্থাতেই অবৈধভাবে কেউ বালু উত্তোলন করতে পারবে না।'
অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে জনবসতিসহ এখানকার চড় বিলীন হয়েছে নদীর বুকে। স্থানীয়রা চান সরকার পরিকল্পিত উদ্যোগের মাধ্যমে বালু উত্তোলন বন্ধ করবে।