দেশে এখন
0

পোড়া চিনির বিষাক্ত তরল মিশছে কর্ণফুলীতে

চট্টগ্রামে আগুনে পুড়তে থাকা চিনি কারখানার বিষাক্ত তরল মিশছে কর্ণফুলী নদীতে। এতে মারা যাচ্ছে নদীর ছোট মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণী। পরিবেশ বিপর্যয়ের শঙ্কা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পোড়া চিনির কেমিক্যাল পানিতে মিশে যাওয়ায় অক্সিজেনের মাত্রা কমে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এদিকে দুদিনেও পুরোপুরি নেভেনি এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজের আগুন।

কর্ণফুলীর বিস্তীর্ণ অঞ্চলে এখন প্রায় এক লাখ টন অপরিশোধিত চিনি মেশানো কালো পানি। বিপুল এ বর্জ্যে দূষিত হয়ে পড়েছে নদীও।এতে নদীর বুকে ভেসে উঠছে নানা প্রজাতির মাছ। শ্বাস নিতে না পেরে দুর্বল হয়ে ভেসে উঠেছে জলজ প্রাণী। মাছ ধরতেই নদীর পাড়ে ভীড় স্থানীয়দের।

স্থানীয়রা বলেন, 'এস আলমের চিনি কলের পানি এসে নদীর পানি বিষাক্ত হয়ে গেছে। মাছ ভেসে উঠছে। সবাই মাছ ধরছে।'

কেউ জাল দিয়ে, কেউ খাঁচা বা ঝুড়ি এমনকি হাত দিয়েও মাছ ধরে নিচ্ছেন অনেকে। ভোর থেকেই খবর আসতে শুরু করে নদীতে মাছ ভেসে উঠছে। পরে স্থানীয়রা মাছ ধরতে ছুটে আসেন।

আরেকজন বলেন, 'শুনছি অনেকে মাছ ধরছে সেই খবর পেয়ে আমরাও আসছি মাছ ধরার জন্য।'

 সরেজমিন দেখা যায়, তৃতীয় দিনের মতো চিনির গুদামটিতে জ্বলছে আগুন।আগুন নেভাতে ক্রমাগত পানি দিয়ে যাচ্ছে দমকল কর্মীরা। পুরে যাওয়া চিনি তরলাকারে কালচে বর্ণের হয়ে বেরিয়ে আসছে। যা ছোট ছোট ট্রাকযোগে। পাশেই ফেলা হচ্ছে।

কেবল তাই নয়, কারখানার একটি অংশ থেকে বেশ কয়েকটু ছিদ্র দিয়ে তীব্র বেগে বেরিয়ে আসছে কালো রঙের তরল। পরে পাশে ড্রেনে গিয়ে পরছে। সেখান থেকে সরাসরি গিয়ে মিশছে নদীর পানিতে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিনিমিশ্রিত এসব পানির কারণে নদীর পানির স্বাভাবিকতা নষ্ট করেছে। এর প্রভাব সরাসরি মাছ এবং অন্যান্য জলজ প্রাণীর উপর পড়বে।

নদী বিশেষজ্ঞ প্রফেসর মঞ্জুরুল কিবরিয়া বলেন, 'কর্ণফুলি নদীর একটা আশার কথা হচ্ছে যেহেতু এইটা জোয়ার ভাটা নদী। জোয়ার ভাটার ফলে এইগুলো নিউট্রালাইজ হয়ে যাবে হয়তো কিছুদিন সময় লাগবে। কিন্তু এর আগেই নদীর জীব বৈচিত্র সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তবে এ নিয়ে এস আলম কর্তৃপক্ষের কারও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। বুধবার কারখানার ভেতরে গণমাধ্যম কর্মীদের প্রবেশেও ছিল নিষেধাজ্ঞা।

ইএ