চট্টগ্রামে খালে পড়ে নিখোঁজ শিশু, ১১ ঘণ্টায়ও হয়নি উদ্ধার

শিশুটিকে উদ্ধারে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস ও ডুবুরি দল | ছবি: এখন টিভি
0

চট্টগ্রামের কাপাসগোলার হিজরা খালে পরে নিখোঁজ ছয় মাস বয়সী শিশু ১১ ঘণ্টায়ও উদ্ধার হয়নি। দুর্ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিস ও সিটি করপোরেশন যৌথ উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। তবে আবর্জনা ও স্রোতের কারণে উদ্ধার তৎপরতায় বেগ পেতে হচ্ছে। গেল পাঁচ বছরে নগরীতে খাল-নালায় পরে মারা গেছেন অন্তত আট জন।

দুই ডুবুরির প্রাণান্ত চেষ্টা। একবারে ডুব দিয়ে দীর্ঘক্ষণ খুঁজে উঠে আসছেন। সবাই আশায় বুক বাঁধছেন, পরক্ষণেই হতাশ হচ্ছেন। অন্যদিকে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরাও। ময়লা আবর্জনা সরিয়ে ডুবুরি দলের কাজকে সহজ করার চেষ্টা করছেন তারা।

এক পর্যায়ে এস্কেভেটর দিয়ে আবর্জনা সরানোর কাজ শুরু হয়। বৃষ্টির তোড়ে ভেসে আসা দুই ট্রাক ভর্তি আবর্জনা পরিষ্কার করা হয়। তবুও হদিস মেলে না ছয় মাসের শিশু সেহরিশের।

স্থানীয়রা জানান, সামান্য বৃষ্টিতেই খালের পানি উঠে আসে সড়কে। তখন খাল-নালার পার্থক্য থাকে না। এজন্য খালের ধারে বাঁশ দিয়ে প্রতিবন্ধকতা দেয়া হয়। তবে খাল পরিষ্কারে তা সরিয়ে ফেলা হয় মাস খানেক আগে। সেই খালি অংশেই রিকশা উল্টে খালে পরে যায় শিশুটির মা-দাদী রিকশাচালকসহ চারজন। সবাইকে উদ্ধার করা গেলেও নিখোঁজ হয় শিশুটি।

স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, 'এখানে বাঁশের একটা ব্যারিকেট ছিল যেন নালার ভেতর কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে। কিন্তু কাজ করার সময় দ্বিতীয়বার ওরা খুলে ফেলছে আর এটা দেয়া হয়নি।'

খবর পেয়ে প্রথমে স্থানীয়রা ও পরে ফায়ার সার্ভিসসহ সিটি করপোরেশনের উদ্ধারকারী দল যোগ দেয়। উপস্থিত হন সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনও।

তিনি বলেন, 'ছয় মাসের একটা শিশু ছিটকে গেছে। তার মাসহ পুরো রিকশাটাই পড়ে গেছে। পরে এখানকার পথচারী এবং রিকশাওয়ালারাসহ শিশুটির মা-বাবাকে উদ্ধার করেছে। বাচ্চাটাকে এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। উদ্ধার তৎপরতা চলছে। উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানে আছি।'

ফায়ার সার্ভিস জানায় বৃষ্টির কারণে খালে স্রোত রয়েছে। তাই শিশুটি ভেসে গিয়েছে কি না সেটি মাথায় নিয়েও চলছে উদ্ধার তৎপরতা। আর ডুবুরিরা জানান খালের নিচেও আবর্জনার স্তূপের কারণে উদ্ধার কার্যক্রমে বেগ পেতে হচ্ছে।

চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, 'যেখানে আটকে থাকার মতো বা যেখানে পাওয়ার মতো সেগুলো ভালোভাবে খোঁজা হচ্ছে। ড্রেনের মধ্যে প্রচণ্ড পলিথিন বা বোতল ছিল, গুলো অলরেডি পরিষ্কার করা হয়েছে। আরও যেখানে আছে সেখানে পরিষ্কার করা হচ্ছে। আর আমাদের ডুবুরি নেমেছে।'

২০২১ সালে চারজন, ২০২৩ সালে দুইজন, ২০২৪ সালে একজনসহ গেলো পাঁচ বছরে অন্তত আটজন নগরীর বিভিন্ন খাল-নালায় পরে মারা গিয়েছেন।

এসএস