আংটি, বালা, গলার হার হচ্ছে শিল্পীর সুনিপুণ ছোঁয়ায় তৈরি অলঙ্কার। আদি থেকে বর্তমানে বাঙালির চিরায়ত উৎসব সাজে অনিন্দ্য সজ্জায়। আর সে উৎসবে গহনার আবেদন যেন চিরন্তন।
বিশ্ব অর্থনীতির অন্যতম ধারক এই স্বর্ণ। যাকে কেন্দ্র করে জড়িত আছে দেশের প্রায় ২০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান।
দেশের জুয়েলারি শিল্পকে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরতেই তৃতীয়বারের মতো রাজধানীর বসুন্ধরার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটিতে শুরু হয়েছে তিন দিনের বাজুস মেলা। যেখানে অংশ নিয়েছে দেশের ৪১টি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান।
মেলার প্রতিটি প্যাভিলিয়নেই আছে গহনাপ্রেমি মানুষের ভিড়। পছন্দসই স্বর্ণ বা হীরের গহনা কিনতে ব্যস্ত হয়েছেন ক্রেতারা। এক ছাদের নিচে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সমাহার আর মূল্যছাড়ে খুশি তারা।
একজন ক্রেতা বলেন, 'এধরণের মেলা হলে আমরা কিছু সুবিধা পেয়ে থাকি। অনেকগুলো ব্যান্ডের দোকান আমরা একসাথে পেয়ে যাই।'
মেলায় অংশ নেয়া জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলো জানায়, প্রথম দিন হওয়ায় ক্রেতা-দর্শনার্থী কিছুটা কম। তবে বাকি দু'দিন ছুটির আমেজ থাকায় বাড়বে বেচাবিক্রি।
মেলায় হীরের গহনায় চলছে ২৫ শতাংশ মূল্যছাড়। অন্যদিকে স্বর্ণালঙ্কার তৈরির অর্ডারও মিলছে বিশেষ ছাড়ে।
এর আগে সকালে তিন দিনব্যাপী বাজুস ফেয়ার উদ্বোধন করেন প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী রফিকুন নবী ও দেশবরেণ্য ফ্যাশন ডিজাইনার বিবি রাসেল। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীর।
এরপর একটি সেমিনারে অংশ নিয়ে অতিথিরা বলেন, বাজুস ফেয়ার দেশের জুয়েলারি শিল্পকে সমৃদ্ধশালী করার পাশাপাশি বিশ্ববাজারে নতুন অবস্থান তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি এই মেলার মাধ্যমে দেশের স্বর্ণশিল্পীদের গড়া আধুনিক ডিজাইনের অলঙ্কারের পরিচিতি বাড়বে।
রফিকুন নবী বলেন, 'ডিজাইনের দিকে বেশি লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ অলংকার বললেই আমরা বুঝি নকশা।'
আলোচনায় অংশ নিয়ে বাজুস নেতৃবৃন্দরা বলেন, স্বর্ণ কারিগরদের উন্নত প্রশিক্ষণ জরুরি। পাশাপাশি জুয়েলারি খাতের কাঁচামালে শুল্ক কমানো ও শিল্পবান্ধব নীতিমালার মাধ্যমে সম্ভাবনাময় এই খাতকে এগিয়ে নেয়ার দাবি জানান তারা।
বাজুস মেলা চলবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত। প্রবেশমূল্য জনপ্রতি ১০০ টাকা। তবে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুরা প্রবেশ করতে পারবে টিকিট ছাড়া।