২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠা পেয়ে অর্ধেক কিংবা তারও কম দামে পণ্য দিয়ে ই-কমার্স ব্যবসায় সাড়া ফেলে দেয় ইভ্যালি। তবে সঠিক সময়ে পণ্য না দেয়া, পেতে দেরি হওয়া কিংবা চেক দিয়েও টাকা না দেয়ার অভিযোগ বাড়ে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে।
এসব অভিযোগে গ্রাহকদের দায়ের করা প্রতারণা ও চেক ডিজঅনারের মামলায় ২০২১ সালে ইভ্যালির সিইও রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিন আটক হন। কিছুদিন কারাভোগের পর তার স্ত্রী জামিনে মুক্তি পান। আর ২৭ মাস পর গত ডিসেম্বরে ছাড়া পেয়ে রাসেল আবারও ব্যবসায় ফেরেন। যদিও ভোক্তা অধিকারে ইভ্যালির বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার অভিযোগ অমীমাংসিত ছিলো।
রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) ভোক্তা অধিকারের প্রধান কার্যালয়ে ১৫০টি অভিযোগের বিপরীতে গ্রাহকদের হাতে ১৫ লাখ টাকা তুলে দেয়া হয়। এতে করে সব অর্থ না পেলেও গ্রাহক আংশিক টাকা পাচ্ছেন। বিপরীতে ইভ্যালির কাছে ৫৪৩ কোটি টাকা পায় গ্রাহক ও ব্যবসায়ীরা।
ইভ্যালির প্রতারণার শিকার এক গ্রাহক বলেন, 'ছোট জিনিসগুলো পাওয়ার পরে আমাদের একটু বিশ্বাস সৃষ্টি হয়। তারপর আমরা তিনটা বাইক অর্ডার করি। ডেলিভারির সময় উনারা চেক দেয়। কিন্তু চেক থেকে আর টাকা উঠেনি।'
ইভ্যালির সিইও রাসেল জানান, নতুন করে ব্যবসায় এসে তারা ৬৫ হাজার পণ্যের অর্ডার পেয়েছেন। এ লাভ থেকেই অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। যারা ভোক্তায় অভিযোগ করেছেন বা করেননি পর্যায়ক্রমে সবাইকে টাকা ফেরত দেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
সিইও রাসেল বলেন, 'ইভ্যালিতে ভালো সংখ্যক ক্রেতা তৈরি হয়ে আছে। ইভ্যালি থেকেই মানুষ ই-কমার্সে কেনাকাটা করতে শিখেছে। আমরা এখন যে পদ্ধতিতে চলা শুরু করছি তাতে শুধু অভিযোগ নিষ্পত্তি নয়। যারা অভিযোগ করেনি তাদের সবার দেনা আমরা শোধ করবো।'
অধিক সংখ্যক পাওনাদারকে টাকা ফেরত দিতে পরিমাণে অল্প টাকা পরিশোধ করা হচ্ছে। কাউকে সুযোগ দেয়া নয়, বরং প্রতারিত হওয়া অর্থ যেন ভোক্তা দ্রুত ফেরত পান তার জন্য ভোক্তা অধিকার কাজ করছে।
ভোক্তা অধিকারের মহাপরিচালক বলেন, 'আমাদের এখানে যে সাড়ে ৬ হাজার মামলা ঝুলে রয়েছে সেগেুলো নিষ্পত্তি না করে তাকে এভাবে তো ছেড়ে দিতে পারি না। রাসেল সাহেবের ২৭ মাস নয় ২৭ বছর জেলে থাকলেও যে টাকা দেনা হয়েছে তা শোধ করতে পারবে না। ইভ্যালি এখন ক্যাশঅন ডেলিভারি প্যাকেজ চালাচ্ছে। আপনার কাছে পণ্য গেলে যদি পছন্দ হয় তখন আপনি টাকা দিবেন।'
পণ্য কেনাকাটায় শুধু লোভনীয় অফারে আকৃষ্ট না হয়ে ভোক্তারা সতর্ক হলে প্রতারিত হওয়ার হার কমে আসবে বলে মত ভোক্তা অধিকারের মহাপরিচালকের।