শিক্ষা
দেশে এখন
0

কাল বইমেলা শুরু, উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

রাত পোহালেই দুয়ার উন্মোচন হবে অমর একুশে বইমেলার। বইয়ের গন্ধে মেতে উঠবে লাখো বইপ্রেমী। এক মোহনায় মিলিত হবে লেখক, পাঠক আর প্রকাশক।

মেলাকে ঘিরে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। আয়োজকরা বলছেন, মেট্রোরেলের কারণে এ বছর নতুন মাত্রা পাবে বইমেলা, আনাগোনা বাড়বে পাঠকদের। বৃহস্পতিবার (০১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টায় বইমেলা উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পুরো আয়োজনকে নান্দনিক করে তুলতে নিবিড় মনোযোগী নির্মাণ শ্রমিক, ডিজাইনারসহ স্টলের দায়িত্বরতরা। কোথাও রংতুলির শেষ স্পর্শ, পেরেক-হাতুড়ির ঠুকঠাক শব্দ, আর নানা নকশায় ধীরে ধীরে গরবের মেলা প্রাণ ফিরে পাচ্ছে।

বইমেলা ঘিরে নিরাপত্তার প্রশাসনিক পদক্ষেপের বাইরেও রয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা। চত্বরের ভেতরে-বাইরে ৩০০ এর বেশি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।

শ্রমিকরা বলেন, 'যে কয়টা স্টল আছে সবগুলোর কাজ প্রায় শেষের পথে। প্রতিযোগিতা চলতেছে কার স্টল সবচেয়ে বেশি সুন্দর হয়। আজকের মধ্যেই সম্পূর্ণ কাজ শেষ হয়ে যাবে।'

বিভিন্ন প্রকাশনীর স্টল, প্যাভিলিয়নের মূল কাঠামো সাজাতে তোড়জোড় চলছে। সৌন্দর্য বর্ধনের কাজে নির্মাণ শ্রমিকরা দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন।

প্রকাশকরা জানান, মেলা শুরুর আগে এখন বড় চ্যালেঞ্জ স্টল শতভাগ প্রস্তুত করা। গেল কয়েক বছরের তুলনায় এবার মেলার পরিবেশ নিয়েও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

উৎস প্রকাশনের প্রকাশক মোস্তফা জামান বলেন, 'অনেক বছর পর মনে হচ্ছে বইমেলাটি ভালো হতে যাচ্ছে। কারণ রাজনৈতিক কোন অস্থিরতা কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগ নেই। গত তিন-চার বছর তো আমরা দুর্যোগের মধ্যেই ছিলাম। করোনার মধ্যে দিয়ে গেছি।'

চলতি বছরের বইমেলায় স্বপ্নের মেট্রোরেল নতুন মাত্রা যোগ করতে যাচ্ছে। কেননা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে নামার মুখে পড়বে প্রাণের মেলা। যাতায়াত সহজ হওয়ায় বইপ্রেমীদের ভিড় এবং বই বিক্রি আগের চেয়ে বাড়বে বলে প্রকাশকরা প্রত্যাশা করছেন।

সময় প্রকাশনের প্রকাশক ফরিদ হোসেন বলেন, এবার বইমেলা এবং মেট্রোরেলকে নিয়ে অনেক বেশি প্রচার হয়েছে। জনমনে উৎসাহ উদ্দপনা আছে। একইসঙ্গে মেট্রোতে ভ্রমণ করা এবং বইমেলার আগ্রহ আছে। এই দুটি আগ্রহ যখন বইমেলা মিলে যাবে তখন বইমেলাতে একটা সাড়া পাওয়া যাবে।'

মেলার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মহাপরিচালক জানান, সুষ্ঠুভাবে মেলা আয়োজন করতে সব প্রস্তুতি শেষ। আগামীতে বইমেলা আয়োজনের স্থান অক্ষুণ্ণ রাখা ও চিরায়ত আমেজ ধরে রাখতে বাংলা একাডেমি সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি নূরুল হুদা বলেন, 'সোহরাওয়ার্দী উদ্যান আমরা আগামী বছর যদি না পাই, সেটা এক-দুই বছরের জন্য হতে পারে। অনন্তকালের জন্য এটার বাধা সৃষ্টির কোন কারণ নাই।  যদি আমরা না পাই তাহলে আগামী বছর আমাদের সামনের রাস্তা ব্লক করে পরিমিতভাবে মেলা করতে হবে। বাংলা ভাষার লেখক হিসেবে বলবো বাংলা একাডেমি থেকে অমর একুশে গ্রন্থ মেলাকে সরানো যাবে না।'

এ বছর মেলার বিন্যাসে কিছু পরিবর্তন এসেছে। লিটল ম্যাগ চত্বরেরও পরিবর্তন হচ্ছে। পাশাপাশি 'গ্রন্থ উন্মোচন ও লেখক বলছি' মঞ্চ থাকবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।

বাংলা একাডেমির হিসাব মতে, এবারের বইমেলায় অংশ নিচ্ছে সর্বমোট ৬৩৫ প্রতিষ্ঠানের ৯৩৭টি ইউনিট। এরমধ্যে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১টি প্যাভিলিয়নসহ ১২০ প্রতিষ্ঠানের ১৭৩টি ইউনিট থাকছে। আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৫১৫ প্রতিষ্ঠানের ৭৬৪টি ইউনিট ও ৩৬টি প্যাভিলিয়ন অংশ নিচ্ছে।