অর্থনীতি
দেশে এখন
0

সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে নওয়াপাড়া নৌ-বন্দর

যশোরের এই নৌ-বন্দরের সাথে জড়িত ১০ লাখেরও বেশি মানুষ

সড়ক, রেল ও নৌপথে ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে নব্বইয়ের দশকের শুরুতে নওয়াপাড়ায় ব্যাপক প্রসার ঘটেছিল সার, খাদ্যশস্য ও সিমেন্ট বাণিজ্যে। এরপরেই নওয়াপাড়া পরিণত হয় দেশের অন্যতম বড় বিপণন কেন্দ্র হিসেবে।

আমদানি করা বিভিন্ন পণ্য চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরে বড় জাহাজ থেকে খালাসের পর তা ছোট বার্জ ও কার্গোতে করে নদীপথে নওয়াপাড়া বন্দরে আনা হয়।

ভৈরব নদে প্রতিদিন অর্ধশতাধিক বার্জ ও কার্গো থেকে পণ্য উঠানো-নামানো হয়। সবশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে এক হাজার ৫৮৪টি জাহাজে পণ্য এসেছে ৬ লাখ ৯২ হাজার ৩১৩ মেট্রিক টন।

ব্যবসায়ীরা বলেন, 'পণ্য পরিবহনের জন্য ছোট নৌযান দিয়ে মালামাল আনতে হয়। নদীটি খনন করা হলে আমরা বড় নৌযান দিয়ে অধিক মাল আনতে পারতাম।'

নওয়াপাড়া পৌরসভার সাবেক পৌর মেয়র এনামুল হক বাবুল বলেন, 'মালামাল উঠানো নামানোর সাথে যারা জড়িত তাদের জন্য কোন বিশ্রামাগার নেই।'

দিন দিন সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে নওয়াপাড়া বন্দর। তবে বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, নদীর নাব্য সংকট রোধ, গাইড ওয়াল নিমার্ণসহ বিভিন্ন দাবি ব্যবসায়ীদের।

বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান শাহাজালাল হোসেন জানান, 'একটা ১৫০০ টনের কার্গো আনলোড করতে একমাস পর্যন্ত সময় লাগে। কিন্তু একটা জেটি থাকলে সেটা তিন দিনে সম্ভব।'

বন্দরে প্রতিদিন প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার শ্রমিক কাজ করে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সমন্বিত ও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার অভাবে সম্ভাবনাময় এ বন্দরের পুরো সুবিধা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।

ব্যবসায়ী এস এম হুমায়ুন কবীর বলেন, 'ব্যবসায়ীদের মালামালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারলে অনেকেই এ বন্দরের প্রতি আকৃষ্ট হবে।'

সম্প্রতি নদের নাব্যতা ফেরাতে ৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নদীর ড্রেজিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে বন্দরের উন্নয়নে ৪৫৪ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। সেটি পাশ হলে বন্দরের আমূল পরিবর্তন হবে।

সহকারী নৌ ও পরিবহন কর্মকর্তা মাসুদ পারভেজ এখন টিভিকে বলেন, 'গাইডল নির্মাণ করে দিলে জাহাজ সরাসরি ঘাটে এসে ভিড়বে। এতে স্বল্প সময়ে অধিক মাল ওঠানামা করা সম্ভব হবে।'

নওয়াপাড়া নৌ-বন্দরে প্রতিদিন গড়ে দেড় হাজার জাহাজ পণ্য খালাস করে। এছাড়া সড়ক পথে পণ্য পরিবহণ করে প্রায় ৫ হাজার ট্রাক। সব মিলে এখানকার ব্যবসা-বাণিজ্যর সাথে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে জড়িত ১০ লাখেরও বেশি মানুষ।

২০০৭ সালে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে নওয়াপাড়ার এই নৌ-বন্দরটি। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে এ বন্দর থেকে সরকারের রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রায় ৩ কোটি টাকা। তাই এ বন্দরের উন্নয়নে সমন্বিত, সুনির্দিষ্ট ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার দাবি ব্যবসায়ীদের।