আজ (শনিবার, ২০ ডিসেম্বর) এক শোক বার্তায় গণতন্ত্র মঞ্চ, গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, গণঅধিকার পরিষদ, গণফোরাম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) নেতৃবৃন্দ এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, শরিফ ওসমান হাদি ছিলেন একজন সাহসী, অকুতোভয় দেশপ্রেমিক।
জাতীয় নেতৃবৃন্দ বলেন, তিনি ছিলেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর যিনি গোটা জাতিকে স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন নতুন বাংলাদেশের। একটি মানবিক, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি লড়াই চালিয়ে গেছেন। তার মৃত্যুতে যে শূন্যতার সৃষ্টি হলো, তা সহজে পূরণ হবার নয়। তার সংগ্রাম ছিল একটি মানবিক রাষ্ট্র গড়ে তোলার সংগ্রাম। সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ে তোলার সংগ্রাম। দল-মত-ধর্ম নির্বিশেষে তার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার জন্য লড়াই অব্যাহত রাখতে হবে।
নেতৃবৃন্দ শরিফ ওসমান হাদির বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
ওসমান হাদির হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার এবং এ বর্বর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন এবং ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান নেতৃবৃন্দ। হত্যাকারীরা যদি দেশ ছেড়ে পালিয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে তাদের অতি দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তারা।
ওসমান হাদির মৃত্যুর পর প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, ছায়ানট এবং সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবিরের ওপর যে ন্যক্কারজনক বর্বরতা চালানো হয়েছে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, ওসমান হাদির লড়াই ছিল একটি গণতান্ত্রিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার। এ ধরনের কর্মকাণ্ড কখনোই হাদির লড়াইয়ের লক্ষ্য ছিল না।
আরও পড়ুন:
ওসমান হাদি একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পক্ষে সংগ্রাম করেছেন। যারা মব উসকে দিয়ে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল এবং ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করছে, তাদের দুরভিসন্ধি রুখে দেয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ। দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের কোনো ধরনের ফাঁদে পা না দেয়ার আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।
বিবৃতিতে বলা হয়, গণমাধ্যম এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনের ওপর হামলা একটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। শহিদ ওসমান হাদির মৃত্যুতে জাতি যখন শোকাহত, ঠিক সে মুহূর্তে দেশকে অস্থিতিশীল করতে একটি হিংস্র গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের দুই অন্যতম শীর্ষ গণমাধ্যম প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার, ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটে হামলা চালিয়ে প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংস করেছে। এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক চেতনাকে ধ্বংস করার নীলনকশার অংশ।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ময়মনসিংহে এক হিন্দু ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা ও পোড়ানোর নৃশংস ঘটনায় আমরা গভীর নিন্দা জানাই। একইসঙ্গে এ ঘটনায় আমরা শঙ্কিত। এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী নেতৃবৃন্দরা হলেন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক।
এছাড়া গণফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের মুখপাত্র ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ূম, আমার বাংলাদেশ (এবি পার্টি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু।





