বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার খবরে উদ্বিগ্ন দলের কর্মী সমর্থক থেকে শুরু করে দেশের আপামর জনসাধারণ।
সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা এখন পর্যন্ত অপরিবর্তিত। সংকটাপন্ন অবস্থায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) আছেন দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। দেশি-বিদেশি ডাক্তারদের নিয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানেই তার চিকিৎসা চলছে। চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন তারা।
কেন্দ্র থেকে হাসপাতালের সামনে ভিড় না করার নির্দেশনা থাকলেও আজ সকালে দেখা গেলো নেত্রীর জন্য ভালোবাসার টানে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে আসছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। খালেদা জিয়ার বর্তমান এ পরিস্থিতির জন্য শেখ হাসিনাকে দায়ী করার পাশাপাশি দেশ ও দলের এ ক্রান্তিলগ্নে তিনি সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরবেন এ আশা দলীয় কর্মীদের।
কর্মী সমর্থক ছাড়াও দলের নেতারা খোঁজ নিতে এসে বললেন, সংকটাপন্ন অবস্থায় আছেন খালেদা জিয়া। দেশবাসীর কাছে চাইলেন দোয়া। মায়ের এ পরিস্থিতিতে শিগগিরই দেশে ফিরবেন তারেক রহমান বলেও জানান তারা।
সাবেক সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখন পর্যন্ত অপরিবর্তিত। দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।’
আরও পড়ুন:
খায়রুল কবির খোকন বলেন, ‘তারেক রহমানের উৎকণ্ঠা, মায়ের প্রতি ছেলের যে আবেগ, মায়া, ভালোবাসা আমরা আশা করছি দ্রুতই তিনি দেশে ফিরে আসবেন হয়তো। আমরা তার জন্য অপেক্ষা করছি যে, তিনি কখন আসবেন। উনি যেকোনো সময় হয়তো চলে আসতে পারেন। আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য খালেদা জিয়াকে সিসিইউ থেকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়েছে।’
আর জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দেখে এসে জানান, তার শারীরিক অবস্থা ক্রিটিক্যাল তবে স্থিতিশীল আছে। ডাক্তারদের ডাকে তিনি সাড়াও দিচ্ছেন। শেখ হাসিনার ফাঁসি দেখার জন্য হলেও বেগম জিয়া সুস্থ হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিবিড় পরিচর্যা পাচ্ছেন। উনার শারীরিক অবস্থা ক্রিটিক্যাল। তবে স্থিতিশীল আছে, এখনও ফাইট করছেন। তিনি সজ্ঞানে আছেন, সজাগ আছেন। চিকিৎসক এবং নার্স যে নির্দেশনা দিচ্ছেন সেগুলো উনি ফলো করতে পারছেন। দেশবাসীর কাছে আহ্বান থাকবে উনার দ্রুত আরোগ্যের জন্য সবাই দোয়া করবেন।’
আরও পড়ুন:
এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘সবাই দোয়া করবেন উনার জন্য। আল্লাহ যেন দ্রুত সুস্থ করে দেন। আমাদের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে উনাদের যে লড়াই, সে লড়াইয়ে যে গণতান্ত্রিক উত্তরণের দিকে যাচ্ছে সেটি যেন উনি নিজে দেখে যেতে পারেন। যার কারণে উনার আজকে এ পরিণতি হয়েছে, আমার মনে হয় হাসিনার ফাঁসি দেখা পর্যন্ত যেন আল্লাহ উনাকে বাঁচিয়ে রাখেন।’
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘উনার যে সিচুয়েশন তার তিনটা শব্দ বলবো। উনার অবস্থা ক্রিটিক্যাল কিন্তু স্ট্যাবল। উনি কমিউনিকেট করতে পারছেন। উনাকে যে ডিরেকশনটা দিচ্ছেন ডাক্তাররা, সেটা উনি নিতে পারছেন। আমাদের কাছে দোয়া ছাড়া কোনোকিছু নেই এখন।’
তবে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। নতুন করে ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের সংক্রমণে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে গত রোববার (২৩ নভেম্বর) বেগম খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।





