সহস্রাধিক তাজা প্রাণ আর অগণিত ছাত্র-জনতার ত্যাগে দীর্ঘ আওয়ামী লীগের অবসানের মধ্যে দিয়ে জনসাধারণের মাঝে তৈরি হয় বৃহৎ রাষ্ট্র সংস্কার ভাবনা। ফলে গঠন করা হয় সংস্কার কমিশন যা বর্তমানে কাজ করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন নামে।
রাজনৈতিক দলগুলোকে এক ছাদের নিচে এনে রাষ্ট্র সংস্কারের যে উদ্যোগ কমিশনগুলো নিয়েছিল সেগুলো বাস্তবায়নে সবার সঙ্গে ঐকমত্য পৌঁছাতে মার্চ থেকেই আলোচনা শুরু করেছে কমিশন। সংস্কার নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে সকালে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে বৈঠকে বসে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি দল।
বৈঠক পূর্ব সূচনা বক্তব্যে জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের জানান, জাতীয় স্বার্থে সকল সংস্কারে ঐকমত্য পোষণ করবে তার দল।
নায়েবে আমির আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, 'যেখানে যেখানে আমাদের নতুন কিছু সংযোজনের প্রয়োজন আছে, কিছু বিয়োজনের প্রয়োজন আছে, কল্যাণের জন্য যেটা প্রয়োজন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সেই কাজে, সেই পরিবর্তনে, সেই সংস্কারে পরিপূর্ণভাবে ঐকমত্য পোষণ করে।'
এসময় তিনি আরও জানান, স্থায়ী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ থাকবে জামায়াত।
নায়েবে আমীর আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, 'কিছু বিয়োজনের প্রয়োজন আছে এবং যেটা দেশের জন্য কল্যাণকর, জাতির জন্য কল্যাণকর, আমরা দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দলীয় স্বার্থ এবং ব্যক্তি স্বার্থকে আমরা কখনোই প্রাধান্য দিতে চাই না। আমরা প্রাধান্য দিবো না।'
অন্যদিকে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জামায়াতের অবদান জাতির স্মরণে থাকবে বলে মন্তব্য করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ। জানান, জাতীয় সনদের দিকে অগ্রসর হওয়াই তাদের মূল লক্ষ্য।
অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেন, 'অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে একটি জাতীয় সনদে উপনীত হতে চাই। এটাও স্মরণ করা দরকার যে এক ঐতিহাসিক মুহূর্তে আমরা আছি। আমাদের এই সুযোগ যারা তৈরি করে দিয়েছেন যে বীর শহীদরা, তাদের কাছে আমাদের একটা ঋণ আছে। যেন এই সুযোগ কোনো অবস্থাতেই হাতছাড়া না হয়ে যায়। যেন এই সুযোগকে কেন্দ্র করে আমরা এমন এক বাংলাদেশ তৈরি করতে পারি যেখানে কোনো অবস্থাতেই কাউকে নিপীড়নের মুখে পড়তে না হয়। বিচার বা বিচার বহির্ভূত ব্যবস্থার মধ্যে যেন মুকাবিলা করতে না হয়।'
সব রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে অতি দ্রুতই জুলাই সনদ তৈরি করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে জামায়াত ইসলামী ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।