পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ছয় দফা: কারিকুলাম যুগোপযোগী করার পরামর্শ

পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও পাঠ কার্যক্রম
পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও পাঠ কার্যক্রম | ছবি: এখন টিভি
0

দেশের কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থার নানা অনিয়ম-অসংগতি রোধে সম্প্রতি ৬ দফা দাবিতে সরব হয়েছে দেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। তবে, তাদের কিছু দাবিকে অযৌক্তিক বললেন, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর মহাপরিচালক। যদিও, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিগুলো বাস্তবায়নের সরকার কাজ করছে বলে জানান তিনি। এদিকে কারিগরির কারিকুলাম যুগোপযোগী করার পরামর্শ শিক্ষাবিদদের।

উন্নত বিশ্বে যেখানে কারিগরি শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করে, সেখানে বাংলাদেশে সঠিক নজরদারির অভাবে কারিগরি শিক্ষা নিয়ে রয়েছে অবহেলার অভিযোগ।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকলেও অবকাঠামোর অভাব, পর্যাপ্ত ল্যাব ও আধুনিক যন্ত্রপাতির অনুপস্থিতি তো আছেই। এসব প্রতিষ্ঠান চলে প্রয়োজনের তুলনায় মাত্র ১৮ শতাংশ শিক্ষক দিয়ে। এছাড়া, কারিগরি শিক্ষায় যেখানে ১০ থেকে ১২ শিক্ষার্থীর বিপরীতে ১ জন শিক্ষক থাকা দরকার, সেখানে ৭০ থেকে ৭৫ শিক্ষার্থীর বিপরীতে আছেন ১ জন।

দেশের সরকারি বেসরকারি ৬শ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ৫ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য কেবল একটি বিশ্ববিদ্যালয়। সেই ডুয়েটে আসন সংখ্যা মাত্র ৭শ'। এমনকি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চাকরিতে বেতনও সামান্য কারিগরির শিক্ষার্থীদের।

সমস্যা সমাধানে গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৬ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করে পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা। যেখানে আছে ল্যাব সহকারীদের শিক্ষক পদে পদায়ন না করা, টেক-ননটেক জটিলতা নিরসন, ইংরেজি মাধ্যমসহ চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম চালু, স্বতন্ত্র 'কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা' মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা ও 'কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন' গঠন,পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মতো দাবিগুলো।

তবে, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, শিক্ষার্থীদের কিছু দাবি যৌক্তিক নয়, তবে বিবেচনায় নেয়ার মতো দাবিগুলো ধারাবাহিকভাবে বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছে সরকার।

কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শোয়াইব আহমাদ খান বলেন, তাদের কিছু অযৌক্তিক দাবি আছে। তাই আমরা শিক্ষার্থীদের জানিয়েছে অযৌক্তিক নয়, সব যৌক্তিক দাবির সাথে আমরা একমত।’

এদিকে, শিক্ষাবিদরা বলছেন, নানাভাবে ব্যাহত হচ্ছে দেশে কারিগরি শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য। তাই, এই শিক্ষাকে আরও যুগোপযোগী করার পরামর্শ এই শিক্ষাবিদের। বললেন, বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের চাহিদার সাথে কারিগরির কারিকুলামের সংযোগ স্থাপন করতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআর বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুস সালাম বলেন, ‘তাদের যখন আমরা কর্মজগতের জন্য তৈরি করি, সে কর্মজগত বা ইন্ডাস্ট্রির সাথে তাদের যে সংযোগ, ইন্ডাস্ট্রিতে তারা ইন্টার্নশিপ করবে, করে শিখবে, শিখে না ওখানে কন্ট্রিবিউট করবে। সে ধরনের সুযোগও তো আমাদের এখানে তৈরি করা হয় নি। তাত্ত্বিকভাবে শিক্ষার্থীরা যতটুকু জানে, প্র্যাক্টিকালি তারা অনেক পিছিয়ে আছে।’

অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি ৩১শ' শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে উল্লেখ করে মহাপরিচালক জানান, শূন্য পদে নতুন করে আরও নিয়োগ দিয়ে শিক্ষক সংকট দূর করা হবে।

এএইচ