দুই যুগ আগেও বাংলাদেশ রেলওয়ে ছিল লাভজনক প্রতিষ্ঠান। যাত্রী ও পণ্য পরিবহন করে যে আয় হতো তা দিয়ে ট্রেন পরিচালনার সব ব্যয় মেটানোর পরও কিছু টাকা উদ্বৃত্ত থাকত। ১৯৯৮-৯৯ অর্থবছর রেলে লাভ হয় ১৮ কোটি টাকা। এরপর সময় যত গড়িয়েছে লাভজনক প্রতিষ্ঠানটিতে লোকসান বেড়েছে। এখন আয়ের চেয়ে ব্যয় আড়াই থেকে তিনগুণ বেশি।
এমন অবস্থায় অপরিকল্পিত ব্যয় কমিয়ে রেলকে লাভে আনতে উদ্যোগী অন্তর্বর্তী সরকার। তারই অংশ হিসেবে শুক্রবার রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল পরিদর্শনে আসেন রেলপথ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
শুরুতে চট্টগ্রামের পাহাড়তলির ওয়াগন ও কোচ মেরামত কারখানা পরিদর্শন করেন তিনি। এসময় রাজস্ব বাড়াতে কোচ ও ওয়াগন মেরামত বৃদ্ধির পাশাপাশি নিজস্ব সক্ষমতায় নতুন কোচ ও ওয়াগন তৈরির পরামর্শ দেন কর্মকর্তাদের।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘ওয়ার্কশপের মর্যাদায় উন্নীত করার জন্য আমরা এখন ডিপিপি প্রণয়নে কাজ করছি। এটি কার্যকর হলে বাইরে লোকোমোটিভস ও ক্যারিজের পার্টস এনে এখানে সংযোজন করা হবে। এর ফলে ব্যয় কমবে এবং দ্রুত এগুলো পাব।’
তিনি বলেন, ‘ইমপোর্ট করতে অনেকদিন লাগে। আপনি অর্ডার দিলেন, এরপর বানাবে এরপর সেটা আনা হবে। কিন্তু তখন পার্টস আনবে, এখানে সংযোজন হবে, ভ্যালু অ্যাড হবে এবং এটাতে আমাদের খরচ কমবে।’
পরে উপদেষ্টা সিআরবি রেলওয়ে হাসপাতাল পরিদর্শনে যান। এসময় ১০০ শয্যার এই হাসপাতালে শুধুমাত্র ১জন চিকিৎসক ও যন্ত্রপাতি সংকটে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেলের রোগীর চাপ কমাতে এই হাসপাতালকে জেনারেল হাসপাতালে রূপান্তরিত করতে কাজ করছে সরকার। এ বিষয়ে দ্রুত সময়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে চুক্তি করবে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘চিটাগাং মেডিকেল কলেজে সিট পাচ্ছে না। আর এখানে সিট খালি। তো এজন্য ওনাদের সঙ্গে আমরা রেলপথ ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটা এমওইউ করবো। যার অধীনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ডাক্তার দেবেন, ইকুইপমেন্ট দিবেন।’
পরে রেলের সার্বিক মানোন্নয়নে পূর্বাঞ্চল কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও অংশীজনদের সাথে মতবিনিময় করেন রেলপথ উপদেষ্টা। এসময় অংশীজনরা যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি রেলের আয় বাড়াতে পণ্যপরিবহন ও রেলের অরক্ষিত হাজার হাজার একর জমির সঠিক ব্যবহারের উপর গুরুত্বারোপ করেন।