জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার রোধে আইইপিএমপি নীতি সংশোধনের দাবি

আইইপিএমপি বাস্তবায়নে দূষিত জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বাড়বে | এখন টিভি
0

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো ঢাকায়ও জলবায়ু ধর্মঘট পালন করেছে দেশের তরুণ জলবায়ু কর্মীরা। ধর্মঘটে সমন্বিত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মহাপরিকল্পনা (আইইপিএমপি) বাস্তবায়ন হলে ব্যয়বহুল ও দূষিত জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার আরো বাড়বে মন্তব্য করে এটি দ্রুত সংশোধনের দাবি জানান তারা।

আজ (শুক্রবার, ১১ এপ্রিল) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে এ দাবি জানান তারা। বর্তমান পরিকল্পনা জলবায়ু লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং এর ফলে দেশের জলবায়ু সংকট আরও গভীর হতে পারে বলে তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

বৈশ্বিক জলবায়ু ধর্মঘটের অংশ হিসেবে আয়োজিত সমাবেশে তরুণ জলবায়ু কর্মীরা রঙিন ব্যানার, পোস্টার ও স্লোগানের মাধ্যমে জীবাশ্ম জ্বালানির ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরেন। ‘ভুয়া সমাধান নয়, নবায়নযোগ্য শক্তি চাই’ শীর্ষক স্লোগানে মুখরিত ছিল সমাবেশস্থল।

জলবায়ু পরিবর্তনের সংকট তুলে ধরে তারা বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য টেকসই ও বাসযোগ্য বাংলাদেশ গড়তে হলে জ্বালানি নীতিতে নবায়নযোগ্য উৎসগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। কার্বন নিঃসরণ কমাতে জীবাশ্ম জ্বালানি-নির্ভর বিদ্যুতে বিশ্বের উন্নত দেশ এবং বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিনিয়োগ বন্ধ করতে হবে।’

সমাবেশে ইয়ুথনেট গ্লোবালের নির্বাহী সমন্বয়ক সোহানুর রহমান বলেন, ‘জলবায়ু সংকটকে বিবেচনায় রেখে আমাদের শক্তি পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। আইইপিএমপিতে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর সুবিধা নিশ্চিত করার বদলে দরকার একটি ন্যায্য, স্বচ্ছ ও স্থানীয় বাস্তবতার প্রতিফলন ঘটানো পরিকল্পনা।’

জলবায়ু কর্মী আরুবা ফারুক বলেন, ‘জলবায়ু সংকটে দায়ী নয় বাংলাদেশ, অথচ ক্ষতির শিকার আমরা। তাই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে উন্নত দেশগুলোকে।’

তরুণদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘আইইপিএমপি বিগত সরকারের একটি ভুল পরিকল্পনার অংশ, যা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের আর্থিক সংকটকে উপেক্ষা করেছে। এ পরিকল্পনায় বিদ্যুতের চাহিদা অতি উচ্চাকাঙ্ক্ষিতভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে, যার সুযোগ নিয়েছে জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভর প্রভাবশালী গোষ্ঠীগুলো।’

বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) চেয়ারম্যান অধ্যাপক কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘আইইপিএমপিতে নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণের কোনো সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন নেই। কোন বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে কত কার্বন নিঃসরণ হচ্ছে, সেটির ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি। একই সঙ্গে রিনিউয়েবল এনার্জি পলিসি ২০২৫-এর সঙ্গে সমন্বয় করে আইইপিএমপিকে সংশোধন করতে হবে।’

বৈশ্বিক জলবায়ু ধর্মঘটের অংশ হিসেবে আজ দেশের ৫০টি জেলায় একযোগে কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এতে দেশের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।

এএইচ