৫ আগস্ট পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে সামনে আসছে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিভিন্ন দুর্নীতির খবর। আজ (সোমবার, ১০ মার্চ) ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কেম্যান দ্বীপপুঞ্জসহ মোট সাত দেশে শেখ হাসিনার ও তার পরিবারের বিপুল পরিমাণ সম্পদের সন্ধান পেয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ১২৪ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে শেখ পরিবারের ৬৩৫ কোটি টাকা ও ১৯ হাজার ৬৮০ কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ করেছে সরকার। এছাড়া মালয়েশিয়ান ব্যাংকে পাওয়া গেছে তাদের স্লাশ ফান্ড।
শফিকুল আলম বলেন, '২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত ২৩৪ বিলিয়ন ডলার বাইরে পাচার হয়ে যায়। এবং এর মধ্যে ১৭ বিলিয়ন ডলার ছিল যেটা পাচার হয় বাংলাদেশের ব্যাংকিং সিস্টেম থেকে। আমাদের সরকারের প্রথম গুরুত্ব এটা বাংলাদেশের মানুষের টাকা এবং এটা যেভাবেই হোক আমরা এ টাকাটা ফিরিয়ে আনতে চাচ্ছি।'
তিনি জানান, ১১টি কোম্পানি ও স্বতন্ত্র ব্যক্তিকে ধরে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে টাস্কফোর্স, যার মধ্যে শেখ হাসিনা, তার পরিবার ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব টাকা ফেরাতে নতুন বিশেষ আইন তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার, যা এক সপ্তাহের মধ্যে পাশ করার কথাও জানান প্রেস সচিব।
তিনি বলেন, 'আইনি সহায়তা পেতে অনেক ল' ফার্মের সঙ্গে সরকার ও টাস্কফোর্স কথা বলছে। ল' ফার্মের সঙ্গে অ্যাগ্রিমেন্ট করতে এ আইন সাহায্য করবে। ২০০টা ল' ফার্মের সঙ্গে আমরা ইতোমধ্যে কথা বলেছি। তবে এখনও সিলেকশন হয়নি। একটা আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সিলেকশন হবে। আমরা ৩০টার মতো ল' ফার্মের সাথে চুক্তিতে যাব। সেটা নিয়েও কথাবার্তা হচ্ছে।'
এদিকে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ২০২২ সালে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেন শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা। অভিযোগ আছে, প্রভাব খাটিয়ে শেখ হাসিনা ছাড়াও ১০ কাঠা করে ছয়টি প্লট বরাদ্দ নেন ছেলে সজীব আহমেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা এবং তার ছেলে-মেয়ে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিক।
শেখ রেহানার মেয়ে ও সাবেক ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি তার খালা শেখ হাসিনার কাছে বোন আজমিনা সিদ্দিকের জন্য প্লট বরাদ্দ দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ছয় মামলার বিপরীতে শেখ পরিবার ছাড়াও রাজউক ও গণপূর্তের কর্মকর্তাসহ মোট ২৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে দুদক।
দুদক মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন বলেন, 'বেআইনি অনুগ্রহ প্রদর্শনের মাধ্যমে আসামিরা অপরাধ করেছেন মর্মে তদন্তকালে প্রমাণিত হয়েছে। এ কারণে এজাহারনামীয় এবং তদন্তে আগত আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির সংশ্লিষ্ট ধারায় এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন-১৯৪৭ এর সংশ্লিষ্ট ধারায় চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন প্রদান করা হয়েছে।'
দুদক জানায়, বিধি অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আদায়ে কাজ করছে তারা।