ভোরের আলো ফোটার পরপরই মানুষের আনাগোনা শুরু হয়ে যায় সৈয়দপুরে পৌর পাইকারি কাঁচাবাজারে। পাইকারি সবজি ব্যবসায়ীরা নিজের জায়গা ঝেড়েমুছে অপেক্ষায় থাকেন কৃষকদের জন্য। চাষিদের আনা পণ্য ফড়িয়াদের মাধ্যমে চলে যায় পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে। এরপর চলে খুচরা ব্যবসায়ীদের সাথে দর কষাকষি।
এসব সবজি নেড়েচেড়ে, যাচাই বাছাই করে কেনেন খুচরা বিক্রেতারা। পরে ভ্যান, সাইকেল, মোটরসাইকেল যোগে সেগুলো চলে যায় গন্তব্যে। তারপর তা জায়গা করে নেয় ক্রেতার ব্যাগে।
একজন ফড়িয়া বলেন, 'গেরস্তরা পণ্য নিয়ে আসে, তারা আড়তদারদের কাছে বিক্রি করে। তাদের থেকে আমরা নেই। আমরা আবার অন্য জায়গায় বিক্রি করি।'
কাঁচাবাজারে দাম ওঠানামা করে প্রতিদিন। একেকটি পণ্যের দাম কমা বাড়ার হারও একেক রকম। তবে বর্ষায় বেশিরভাগ সবজির দাম থাকে চড়া। এজন্য বৃষ্টিতে ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হওয়াকে দুষছেন ব্যবসায়ীরা।
একজন ব্যবসায়ী বলেন, 'এখন বৃষ্টি হওয়ার কারণে বেশিরভাগ পণ্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যেখানে ১০ মণ পণ্য পাওয়ার কথা সেখানে পাচ্ছি ২ মণ। এর জন্য দাম বেড়ে গেছে।'
এই মৌসুমে কিছু কিছু সবজি সেঞ্চুরি হাঁকায় খুচরাতে। পাইকারিতেও থাকে যথেষ্ট প্রভাব। দাম বেড়ে গেলে বিপাকে পড়ে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা। শুরুতে পাইকারি ব্যবসায়ী এর কারণ ব্যাখ্যা করেন খুচরা ব্যবসায়ীকে। পরে সেই কথার পুনরাবৃত্তি ঘটে সাধারণ ক্রেতার কাছে। দু'পক্ষেরই টান পড়ে পুঁজিতে, পণ্য নিয়ে চলে কাড়াকাড়ি।
কৃষক, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা শেষে একটা সবজি পৌঁছায় ক্রেতার ব্যাগে। পাইকারি বাজারের শেষের দিকে কিছু খুচরা ক্রেতার দেখা মেলে। কম দামে পাওয়ার আশায় পাইকারি বাজারে উকি দেন তারা। দরাদরি শেষে কখনও জেতেন, কখনও হারেন। তবে পণ্যের দাম বাড়ুক বা কমুক পরিবর্তন ঘটে না বাজারে কাজ করা শ্রমিকদের।
একজন ক্রেতা বলেন, 'এই বাজারে পাইকারি দামে সবজি কিনতে পারি। খুচরা বাজারে গেলে এর চেয়ে দ্বিগুণ দামে কিনতে হয়। সেজন্য আমরা একটু সাশ্রয়ের জন্য এখানে আসি।'
পাইকারি বিক্রেতা হোক বা খুচরা ক্রেতা, সবারই একটাই দাবি, দ্রব্যমূল্য যেন নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়। নইলে আয়ের সাথে ব্যয়ের সামঞ্জস্য রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে দিনকে দিন।