পোল্ট্রি খামারি আবুল বাশার, গত পাঁচ মাসে উৎপাদন খরচের তুলনায় কম দামে ডিম বিক্রি করে প্রতি মাসে লোকসান গুণছেন অর্ধলক্ষাধিক টাকা। এরই মাঝে এপ্রিলজুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহে খামারে মারা গেছে শত শত মুরগি।
আবুল বাশার বলেন, 'গরমের কারণে প্রায় শতাধিক মুরগি মারা গিয়েছে। এখন আমাদের ডিমের উৎপাদন কম।'
এমন অবস্থায় আবারো ঊর্ধ্বমুখী ডিমের বাজার। সপ্তাহ ব্যবধানে খামারেই প্রতি পিস ডিমের দাম বেড়েছে প্রায় তিন টাকা। গেল সপ্তাহে ৮ টাকা ৪০ পয়সায় বিক্রি হওয়া মুরগির ডিম রোববার ( ১২ মে) বিক্রি হয়েছে ১১ টাকা ১০ পয়সায়। এরপরও সিন্ডিকেটের কারণে সুফল না পাওয়ার অভিযোগ তাদের।
আরেকজন খামারি বলেন, 'আমরা যে দাম পাই সেখানে লাভ ১ টাকা। ১১ টাকা করে বিক্রি করি সেখানে ১০ টাকার উপরে খরচ পড়ে যায়। আমরা আসলে দাম বাড়াতে পারি না। ব্যাপারীরা এসব দাম বাড়াচ্ছে।'
এদিকে খামার থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটার দূরের টঙ্গীর নতুন বাজার ডিমের আড়তে একই ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২ টাকায়। চলতি মাসের ২ তারিখেও যা ছিল ৮ টাকা ৮০ পয়সা। আড়ৎদারদের দাবি, চাহিদামতো যোগান না থাকায় বাড়ছে ডিমের দর।
পাইকারি আড়ৎদারদের একজন বলেন, 'আমাদের চাহিদা হচ্ছে প্রতিদিন ৮০ হাজার ডিম। প্রতিদিন সেখানে পাচ্ছি ২৫ থেকে ৩০ হাজার। চাহিদার তুলনায় ডিম পাওয়া যাচ্ছে না এই কারণে ডিমের দাম বেড়ে যাচ্ছে।'
অন্যদিকে, খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ডিমে ২৫ থেকে ৩০ টাকা বাড়ায় ভোক্তার গুণতে হচ্ছে অন্তত দেড়শ' টাকা।
খুচরা বিক্রেতাদের একজন বলেন, 'এক সপ্তাহ আগে যেখানে ডিম বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা সেখানে এখন বিক্রি হচ্ছে প্রতি হালি ৫০ টাকা করে।'
গত বছর থেকে হঠাৎ হঠাৎ অস্থির হয়ে ওঠে ডিমের বাজার। সবশেষ উৎপাদন থেকে শুরু করে পাইকার ও খুচরা পর্যায়ে ডিমের দাম নির্ধারণ করে সরকার। কিন্তু সিন্ডিকেটসহ নানা কারণে কার্যকর হয়নি সেই দাম। এমন অবস্থায়, বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের কঠোর মনোভাব ও সুষ্ঠু মনিটরিংয়ের দাবি ভোক্তাদের।