দেশে বছরে খেজুরের চাহিদা ১ লাখ টন, যার অর্ধেক প্রায় ৫০ হাজার টন রমজান মাসে লাগে। রমজানের আগেই বিশ্বের নানা দেশ থেকে প্রায় ৩০ ধরনের খেজুর চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছে। কাস্টমসের হিসাবে, বর্তমানে বিভিন্ন বেসরকারি ডিপো ও বন্দরে ১ হাজারের বেশি খেজুর ভর্তি কন্টেইনার খালাসের অপেক্ষায় আছে। যার এক একটিতে ২২ থেকে ২৪ হাজার কেজি খেজুর আছে।
বেশি শুল্কে পণ্য খালাস করলে বাজারে প্রতিযোগীতায় পিছিয়ে পড়া ও লোকসানের শংকা থাকে। তাই কয়েক মাস আগে আমদানি হলেও শুল্ক কমানোর আশায় এতোদিন খালাস করেননি আমদানিকারকরা। তাই সরকার ১০ শতাংশ শুল্ক কমানোর ঘোষণা দেয়ায় শেষ মূহূর্তে এসে বন্দরে খালাসের হিড়িক লেগেছে। আগে যেখানে প্রতিদিন ৫ থেকে ১০টি খালাস হতো, এখন প্রতিদিন ৭০ থেকে ১০০টি কন্টেইনার খালাস হচ্ছে। এতে খালাস প্রক্রিয়ায় সময় বেশি লাগছে।
বন্দরে খেজুর ভর্তি কন্টেইনার। ছবি: এখন টিভি
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার কাজী ইরাজ ইশতিয়াক বলেন, ‘খেজুরের ৪টি ক্যাটাগরি আছে। আর ক্যাটাগরিভিত্তিক বিভিন্ন শুল্ক হার হয়। ফলে অনেকসময় প্রবণতা থাকে যে, উচ্চ শুল্ক হারে খেজুর এনে কম শুল্ক হারে ঘোষণা দেয়ার। আমরা এমন বেশকিছু ঘটনাও পেয়েছি। এজন্য আমরাও সতর্ক আছি, যেন সরকার রাজস্ব বঞ্চিত না হয়।’
ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এবার খেজুরের শুল্ক দ্বিগুণ, তিনগুণ বেশি। সঙ্গে ডলারের দামও বেড়েছে। নিম্নমানের ১০ কেজি খেজুরের শুল্ক ছিল ৩০০ টাকা, এখন তা বেড়ে হয়েছে ১৩০০ টাকা। তবে সরকার ১০ শতাংশ কমানোয় ৫৩ শতাংশ শুল্ক করের জায়গায় এখন লাগবে ৪৩ শতাংশ। এসব খেজুর বাজারে এলে দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা কমবে বলে মনে করছেন আমদানিকারকরা।
খেজুর আমদানিকারক মো. জাকির হোসেন বলেন, 'খেজুর নিয়ে কোন সংকটের কারণ নেই। কিন্তু ডিউটির জন্য না উঠালে ব্যবসায়ীরা চাপে পড়বে। এটা সিজনের মাল, বিক্রি না হলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।'
খুচরা বাজারে খেজুরের দাম কমেনি। ছবি: এখন টিভি
তবে শুল্ক কমালেও তার কোন প্রভাব এখনও বাজারে পড়েনি। এখনও আগের দামেই খেজুর বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে নিম্নমানের জাহেদি খেজুর প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, মরিয়ম, আজওয়া ও মাবরুম ১০০০ থেকে ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ বেশি।
পাইকারি খেজুর বিক্রেতা মো. নুরুল আজিম বলেন, ‘নতুন এলসি হয়ে যে খেজুর আসতে যাচ্ছে, সে অনুযায়ী হয়তো রেট কম হবে।’
বন্দর থেকে খেজুর খালাসে গড়িমসি করায় বাজারেও কৃত্রিম সংকট তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন ব্যবসায়ীরা।