শহরের ফুটপাতে এখন আনন্দ উড়ছে। স্বপ্ন, আবদারের মুদ্রা নিয়ে ফুটপাতের বাজারে ক্রেতা। ঈদে প্রিয়জনের জন্য উপহার নিতে হবে সাধ্যের মধ্যে। বিপনীবিতানের পণ্য চোখ টেনে নিয়ে গেলেও সীমিত আয় দেয়াল তৈরি করে দেয়। তাই আলোর ঝলকের দিকে পা না বাড়িয়ে ফুটপাতেই আনন্দ কুড়িয়ে নেয়া। যেখানে মার্কেট তুলনায় কম মূল্যে হরেক রকমের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসে আছেন ক্রেতারা। তবু যেন অন্যান্য ঈদের বাজারের তুলনায় এবার ঈদ বাজার মন্দা বলছেন বিক্রেতারা। সকলের গলাতেই যেন আফসোসের সুর।
বিক্রেতারা বলেন, 'বিক্রি এখন কম। আগে বিক্রি ছিল প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। সেখানে এখন ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা সর্বোচ্চ।'
আরেকজন বলেন, 'সাধারণ মানুষের কাছে টাকা বলতে কিছুই নেই। যাও একজন দুইজন পেলে দরকষাকষি করতে করতে শেষ পর্যায়ে যায়। অন্য বছর ১০০ টাকা লাভ করলে সেটা এবছর ৫০ টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে।'
চাকুরিজীবী মেহেদি হাসান। বেতন পেয়েই ছুটে এসেছেন দুই কন্যাকে নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে। বলছিলেন বাবা হওয়ার পর নিজের জন্য নয় সন্তানের জন্য কেনাকাটাতেই যেন তার পরম আনন্দ। আর তার মেয়েরাও যেন বাবার সামর্থ্য বুঝেই পছন্দসই কেনাকাটা করতে এসে খুশিতে আত্মহারা।
মেহেদি হাসানের মেয়ে বলেন, 'বাবার সাথে এসে দুইটা জুতা, ড্রেস ও ব্যাগ কিনেছি।'
মেহেদি হাসান বলেন, 'জুতা, ব্যাগ ও জামা কিনবে এই কারণে তাদের মার্কেটে নিয়ে এসেছি। নিজের কাছে সব থেকে ভালো লাগে সন্তান এবং মা বাবাকে কিছু কিনে দিতে পারছি।'
এবার বাড়তি বাজার মূল্য নিয়ে কিছুটা আপত্তি আছে সকল ক্রেতার মাঝে।
ক্রেতারা বলেন, 'ঈদের কেনাকাটা করতে ভালো লাগে। ভাই বোন, আত্মীয়-স্বজনদের জন্য কেনাকাটা করতে ভালো লাগে নিজের কাছে।'
আরেকজন ক্রেতা বলেন, 'অন্যান্য জায়গা থেকে এবার নিউমার্কেটে দাম বেশি। ফুটপাত থেকে শুরু কর মার্কেটে সব জায়গায় দাম বেশি।'
রাতের আঁধারের মাঝে সড়ক ও পরিবহনের বাতি এবং এলইডির ঝলকে ফুটপাতও যেন পেয়ে যায় বিপনীবিতানের জৌলুস। তাই বিত্ত যাদের আছে তারা যেমন, ইফতারির পর একটু আয়েশ করে কেনাকাটায় বের হন। ফুটপাত যাদের ভরসা তারও সেই স্বাদ পান এমন আলোয়। পরিবার নিয়ে আলোর মাঝেই খুঁজে নেন, প্রিয়জনের উপহারটি।