রমজানের দুই মাস আগেই অস্বাভাবিকভাবে চাল, ডাল, ছোলা ও খেজুরসহ বেশিরভাগ পণ্যের দাম বেড়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে গত সোমবার চাল, তেল, চিনি ও খেজুরের শুল্ক কর কমানোর নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশে চিনি আসে মূলত দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিল থেকে। প্রতি টন অপরিশোধিত চিনি এখন আমদানিতে শুল্ক দিতে হয় দেড় হাজার টাকা। আর পরিশোধিত চিনিতে ৩ হাজার টাকা। এর বাইরে আছে অগ্রিম আয়কর, ভ্যাট ও নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক।
ইন্টারন্যাশনাল সুগার অরগানাইজেশনের তথ্য বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন চিনির দাম প্রায় ৫৯৫ ডলার। আর খাতুনগঞ্জে প্রতি মণ চিনি বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৯৫০ টাকায়। খুচরায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়।
সরকারের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন, এতে নতুন করে পণ্যের দাম বাড়ার সুযোগ নেই।
মেসার্স আর এম এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহেদ উল আলম বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে ভোগ্যপণ্যের দাম এখন কিছুটা নিম্নমুখী। যদি এভাবে থাকে তাহলে আসন্ন রমজানে পণ্য ঘাটতি হবে না। এছাড়া সহনীয় মূল্যে মানুষ পণ্য ক্রয় করতে পারবেন।’
আন্তর্জাতিক তেলের বাজারও নিম্নমুখী। ভোজ্যতেল আমদানিতে এখন ভ্যাট দিতে হয় ১৫ শতাংশ। নতুন শুল্কায়নে পণ্য বাজারে এলে দাম কিছুটা কমার আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।
তবে স্বস্তি নেই খেজুরের বাজারে। গেল অর্থবছরে প্রতি টন খেজুরের শুল্কায়ন মূল্য ছিল ৫০০ থেকে ১ হাজার ডলার। বর্তমানে তা বাড়িয়ে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ করা হয়েছে। সাথে কাস্টমস ডিউটি ২৫ শতাংশ, রেগুলেটরি ডিউটি ৩ শতাংশ ও ভ্যাট ১৫ শতাংশ। এই তিনখাতে ব্যবসায়ীদের আগে কখনও রাজস্ব দিতে হতো না। তবে নতুন শুল্কায়নেও কেবল নিম্নমানের খেজুরের শুল্ক কমানোর আভাস পাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এতে বাজারে খেজুরের দামে খুব একটা প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছেন তারা।
রমজানে চালের খুব একটা প্রভাব না থাকলেও অজানা কারণে দুই মাস আগে থেকেই চালের দাম বাড়তে থাকে। চাল আমদানিতে শুল্ক দিতে হয় ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ। তবে বর্তমানে খুব একটা চাল আমদানি হচ্ছে না। কিন্তু অনেকেই এলসি খুলে রেখেছেন। সরকারের নির্দেশ পেলেই আমদানি শুরু হতে পারে। এমন শঙ্কায় নতুন করে আর চালের দাম বাড়েনি।
চট্টগ্রাম চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ওমর আজম বলেন, 'আমাদের এলসি এখনও খোলা আছে কিন্তু ডিউটি বাড়তি। আর ডিউটি কমলে যদি ভারত থেকে চাল আসে তাহলে এর প্রভাব বাজারে পড়বে।
তবে এখন থেকে আমদানি, সরবরাহ ও দর তদারকি করলে এবার রমজানে বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব বলছেন ব্যবসায়ীরা।