অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
কোনো উপলক্ষ থাকুক কিংবা না থাকুক, আধুনিক জীবনযাত্রার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে ঘরোয়া খাবার বাদ দিয়ে হরমেশাই আমরা জাঙ্কফুড খাই। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসব জাঙ্কফুড তৈরির পদ্ধতি হয় অস্বাস্থ্যকর, মেশানো থাকে নানা ক্ষতিকর উপাদান। যা আমাদের শরীরের ক্ষতির পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যর উপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
শরীরের সাথে মনের সম্পর্কটা ঠিক যেন ঘাড়ের সাথে মাথার মত। আপনি যদি সবসময় অস্বাস্থ্যকর খাবার খান, তবে আপনার অজান্তেই শরীরে নানা অসুখ বাসা বাঁধবে। যার ফলে আপনার চিন্তা শক্তি নেতিবাচক হয়ে পড়বে। আপনার মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাবে। অন্যদিকে ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি খাবার আপনার শরীরকে যেমন ভালো রাখবে, ঠিক তেমনই আপানার মনকেও ফুরফুরে রাখবে।
ধূমপান
মানসিক চাপ কমানোর জন্য অনেকেই ধূমপান করেন। ধূমপানের ফলে ডোপামিন হরমোন নিঃসরণ হয়। ফলে সাময়িকভাবে চাপ কমালেও দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি হয়। কারণ, মস্তিস্ক তখন স্বাধীনভাবে ডোপামিন নিঃসরণ করতে পারে না। এর প্রভাবে মানসিক চাপ বাড়ে। এবং ধূমপায়ী ধীরে ধীরে মানসিকভাবে আরও বেশি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
শারীরিক কাজকর্ম কমে যাওয়া
প্রযুক্তির বিপ্লবের এই যুগে অনেক কোম্পানি রিমোট জবের সুযোগ দেয়। বর্তমানে তাই ভার্চুয়াল জবের প্রসার ঘটছে। এর সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে অনেক সময় অফিসের সময়ের পরও কাজ করতে হয়।
দীর্ঘসময় ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটার ডেস্কে বসে থাকতে হয়, শরীরের নড়াচড়া কম হয়। এছাড়াও, অনেক সময় ব্যায়াম করার সময়ও মেলে না। ঘরের যাবতীয় কাজকর্ম মেশিনের মাধ্যমে করা যায়। এর ফলে মানুষ ধীরে ধীরে মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়। দুশ্চিন্তা, মানসিক চাপ ও বিষণ্নতা ঘিরে ধরে।
প্রযুক্তির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার
প্রযুক্তির কল্যাণে এখন হাতে হাতে মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট সংযোগ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে মুহূর্তেই আমরা আপডেট পেয়ে যাই কাছের মানুষদের। যেকোনো সময় যেকোনো জায়গায় যে কারো সাথে যোগাযোগ করা সহজ হলেও মানসিকভাবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি বিভিন্নভাবেই। সোশ্যাল মিডিয়াতে অন্যদের সুখী পোস্ট দেখে, তাদের জনপ্রিয়তা দেখে আফসোস করছি, হা-হুতাশ করছি। এভাবে নিজের অজান্তেই নিজেকে আমরা অসুখী করে তুলছি। ডিপ্রেশনে চলে যাচ্ছি। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দীর্ঘসময় থাকার কারণে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটছে। যা মারাত্মক শারিরীক ক্ষতির কারণ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশি সময় দেওয়ার ফলে আমাদের যেকোনো কাজে মনোযোগ দেয়ার ইচ্ছাও কমিয়ে দিচ্ছে। এছাড়া প্রযুক্তির প্রতি আসক্তি আমাদেরকে আলাদা করে ফেলছে কাছের মানুষদের থেকে। নানান কারণে বাড়ছে ভুল বোঝাবোঝি। বাড়ছে মানসিক অস্থিরতা। বলা যায় প্রযুক্তি আমাদের কমিউনিকেশন গ্যাপ কমাচ্ছে না, উল্টো আরও বেশি বাড়িয়ে তুলছে।