টিপস , ফিচার স্টোরি
জীবনযাপন
0

বার্ধক্য রোধ করতে পারে শীতকালীন সবজি

তারুণ্য ধরে রাখতে মানুষ কতকিছুই না করে। বার্ধক্য একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তবে অনেকের চেহারায় আগেই বার্ধক্য বাসা বাঁধে। এর অন্যতম কারণ সঠিক খাদ্যাভ্যাসের অভাব। শীত আসার সাথে সাথেই আমাদের খাবারের রুচিতে পরিবর্তন আসে। সেই সাথে বদলাতে হয় খাদ্যাভ্যাস। কারণ এসময় শরীরে বাসা বাঁধে এলার্জি, ঠান্ডা-কাশি, কোষ্ঠকাঠিন্যসহ নানারকম রোগ। সেই সাথে ত্বক হয়ে ওঠে রুক্ষ। এসময় ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখেতে এবং শরীরের ইমিউনি সিস্টেম বাড়াতে সক্ষম এমন খাবার খাদ্য তালিকায় থাকা চাই।

১. গাজর

শীত আসার সাথে সাথেই বাজারে দেখা মেলে এই সবজির। নানা পুষ্টিগুণে ভরপুর সহজলভ্য এই সবজিটি। গাজরে আছে বিটা ক্যারোটিন, ফাইবার, ভিটামিন কে ওয়ান, পটাসিয়াম এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। শীতে ত্বক দ্রুত শুষ্ক হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে গাজর। ত্বকে পটাশিয়ামের অভাব দূর করে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে এই সবজি। এছাড়া গাজরে থাকা ভিটামিন ও মিনারেল চুলকে শক্ত করা এবং চুল পড়া রোধেও দারুণ কার্যকর। এছাড়া এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়।

২. পালং শাক

পালং শাককে বলা হয় রক্ত পরিষ্কারক খাদ্য। এটি রক্ত বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। কাঁচা পালং শাকে ৯১% পানি, ৪% কার্বোহাইড্রেট, ৩% প্রোটিন এবং খুবই সামান্য ফ্যাট থাকে। পালং শাকের কঁচি পাতা ফুসফুস, কণ্ঠনালীর সমস্যা, শরীর জ্বালাপোড়া দূর করতে সাহায্য করে। নিয়মিত পালং শাক খেলে চোখের জ্যোতি বাড়ে এবং মুখের লাবণ্যতা বৃদ্ধি পায়। পোড়া ক্ষত, ব্রণ কিংবা কোথাও কালশিটে দাগ পড়লে টাটকা পালং পাতার রস লাগালে উপকার পাওয়া যায়।

৩. টমেটো

একটি মাঝারি সাইজের টমেটোতে আছে ২২ গ্রাম ক্যালোরি, ১ গ্রাম প্রোটিন, ৫ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট, ১ গ্রাম ফাইবার এবং ৩ গ্রাম চিনি। টমেটোতে রয়েছে লাইকোপিনে সমৃদ্ধ একটি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, যা ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে রক্ষা করে এবং বার্ধক্যজনিত লক্ষণগুলো হ্রাস করতে সহায়তা করে। এছাড়া এটি ভিটামিন সি-এর একটি ভালো উৎস, যা কোলাজেনের উৎপাদন বাড়াতে এবং ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা উন্নত করতে সহায়তা করে।

৪. গ্রিন টি

গ্রিন টি’র উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। ত্বক উজ্জ্বল করতে, কালো দাগ দূর করতে এবং দাগ ছোপের সমস্যা কমাতে গ্রিন টি অতুলনীয়। গ্রিন টিতে রয়েছে ভিটামিন ই, ক্যাফেইন, ক্যাটেচিন, ভিটামিন বি-২ এবং বি-৩, অ্যান্টি অক্সিডেন্টসহ একগুচ্ছ উপাদান, যা সব ধরনের ত্বকের চাহিদা পূরণ করে। রয়েছে রিবোফ্লাভিন নামক ভিটামিন যা ত্বকের তারুণ্য এবং দৃঢ়তা বাড়ায়। গ্রিন টি’তে থাকা নায়াসিন ত্বকের লালচে ভাব কমায়। ক্যাফেইন চোখের চারপাশের কালো দাগ এমনকি ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে। গ্রিন টি পান করা এবং ত্বকে ব্যবহার করা- দুটোই ত্বকের জন্য উপকারী বলে অনেক গবেষণা থেকে জানা যায়। গ্রিন টি এবং এর নির্যাস শুধুমাত্র চেহারায় লাবণ্যতাই আনে না বরং ত্বকের ক্যান্সার প্রতিরোধেও সাহায্য করে।

৫. বিটরুট

তারুণ্য ধরে রাখতে আরেকটি শীতকালীন সবজি হলো টসটসে লাল-বেগুনি বিটরুট। পরিবেশ দূষণ, খাদ্যে ভেজাল, অতিরিক্ত মুখরোচক খাদ্যগ্রহণের কারণে আমাদের ভেতরে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন টক্সিন ও ফ্রি র‍্যাডিক্যাল তৈরি হচ্ছে। ত্বকের ঔজ্জ্বল্য নষ্ট হয়ে দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া, ত্বক ও চুলের রূপ লাবণ্য হারিয়ে যাওয়া, চুল পড়ে যাওয়া-এসব সবকিছুর জন্য অনেকাংশে দায়ী পরিবেশ দূষণ এবং খাদ্যাভ্যাস। বিটালাইন নামক ফাইটোনিউট্রিয়েন্টসে ভরপুর বিটরুট আমাদের খাদ্যতালিকায় অবশ্যই রাখা উচিত। এছাড়া এর আঁশ ও পানি হজমে সহায়তা করে বলে ত্বকে ব্রণ বা ফুসকুড়ি খুব কম ওঠে। এর ভিটামিন-সি ত্বকের এবং ফলিক অ্যাসিড চুলের যত্নে অনন্য। আবার বিটের গ্লুটাথিওন নামের অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট লিভারের কার্যকারিতা ভালো রাখে বলে গবেষণায় দেখা গেছে। বিটের এই অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট লিভারের সমস্ত ক্ষতিকর পদার্থকে দূর করতে সহায়তা করে। এতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে।