এর আগে এক বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব কর্মকর্তা জানান, নগরকান্দা থানার রামপাশা এলাকায় পপি বেগমের (৩৭) সাথে তার স্বামী মো. কাইয়ুম বিশ্বাসের (৪০) খোলা তালাক হয়। তবে শিশুকন্যা তানহা আক্তারকে (৮ মাস) জোর করে রেখে দেয় মো. কাইয়ুম বিশ্বাস। পরে পপি বেগম তার কন্যাকে আনতে গেলে তার সাবেক স্বামী তানহাকে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। পপি বেগম তার কন্যা শিশুকে উদ্ধারের নিমিত্তে আদালতে মামলা করেন।
তিনি আরও জানান, তল্লাশি পরোয়ানামূলে শিশু কন্যা তানহাকে গতকাল (রোববার, ১১ মে) বিকেলে ফরিদপুরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকা হতে উদ্ধার করা হয়। পরে নগরকান্দা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে শিশুটিকে ফিরে পেতে গত বছরের ডিসেম্বরে ফরিদপুর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে মামলা করেন শিশুটির মা পপি বেগম। এরপর শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল সার্চ ওয়ারেন্টের মাধ্যমে শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য নগরকান্দা থানা পুলিশকে নির্দেশ দেয় আদালত।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নগরকান্দা থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক ইরানুল ইসলাম বলেন, ‘র্যাবের মাধ্যমে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে আদালত পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিবেন।’
বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বিকেলে নির্বাহী আদালতের বিচারক উদ্ধার হওয়া শিশুটিকে তার জন্মদাতা মায়ের কোলে ফেরত দেন। এই আদেশে আমরা সন্তুষ্ট হয়েছি।’
সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফজলে রাব্বী বলেন, ‘নিখোঁজ শিশুটি র ্যাব উদ্ধার করে আদালতে প্রেরণ করেছে। শিশুটির মায়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উদ্ধার করা আট মাসের বাচ্চাকে তার জন্মদাতা মায়ের দেয়া হয়। আগামী ২ জুন ধার্য তারিখে এ বিষয়ে চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হবে।’
দীর্ঘ পাঁচ মাস পরে তানহা আক্তারের মা পপি বেগম বাচ্চাকে কোলে পেয়ে আবেগে কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আজ বাচ্চাকে কোলে নিয়ে জড়িয়ে ধরতে পেরে বুকটা জুড়িয়ে গেছে। তবে এতদিন আমার বাচ্চাকে যারা কেড়ে নিয়ে অন্য জায়গায় রেখে দিয়েছিল তাদের বিচার চাই। আর আগামীতে যেন কোনো হয়রানি ছাড়া বাচ্চাকে লালন পালন করতে পারি সেই দাবি জানাই।’
উল্লেখ্য, তিন বছর আগে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের হান্নান সরদারের মেয়ে পপি বেগমের সাথে পার্শ্ববর্তী ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার রামপাশা গ্রামের কাইয়ুম বিশ্বাসের সাথে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো এবং স্বামী ও ননদ মিতা বেগম বিভিন্ন সময় তাকে নির্যাতন করতে থাকে। এর মাঝে তাদের একটি মেয়ে শিশুর জন্ম হয়। পরবর্তীতে গত পাঁচ মাস আগে কলহের জের ধরে তালাক হয়। তালাকের পরে শিশু তানহাকে জোড় করে রেখে দেয়া হয়।





