চলতি বছর জানুয়ারিতে দ্বিতীয়বারের মতো মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর থেকে বেড়েই ভেনেজুয়েলা-যুক্তরাষ্ট্র বিরোধ। ট্রাম্পের নির্দেশে ক্যারিবীয় সাগরে ভেনেজুয়েলার জাহাজ লক্ষ্য করে একের পর এক অভিযান চালাচ্ছে মার্কিন সেনাবাহিনী।
এছাড়া এরইমধ্যে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী জেরাল্ড আর ফোর্ড এবং মার্কিন নৌ-বাহিনীর একটি স্ট্রাইক ফোর্স লাতিন আমেরিকা অঞ্চলে প্রবেশ করেছে। এক বিবৃতিতে, মার্কিন নৌ-বাহিনী জানিয়েছে, গ্রুপটি ১১ নভেম্বর ক্যারিবীয় অঞ্চলে পৌঁছায়।
এ বাহিনীতে বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ডের সঙ্গে চার হাজারেরও বেশি নাবিক, কয়েক ডজন বিমান, গাইডেড-ক্ষেপণাস্ত্র ডেস্ট্রয়ার এবং অন্যান্য জাহাজও রয়েছে। গেল মাসেই লাতিন আমেরিকা অঞ্চলে জেরাল্ড আর ফোর্ড মোতায়েনের নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
আরও পড়ুন:
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রকে মোকাবিলা করতে একটি নতুন প্রতিরক্ষা বিলের অনুমোদন দিয়েছে ভেনেজুয়েলার জাতীয় পরিষদ। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভ্লাদিমির পাদ্রিনো লোপেজের প্রস্তাবের পর জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের ভোটে বিলটি পাস হয়। এসময় ভেনেজুয়েলার জনগণ কারও আধিপত্যের কাছে মাথা নত করবে না বলেও মন্তব্য করেন ভেনেজুয়েলার ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির প্রেসিডেন্ট জর্জ রদ্রিগেজ।
তিনি বলেন, ‘তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য ভেনেজুয়েলায় শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের মাধ্যমে চুরি করা। তাদের লক্ষ্য হল আমাদের দুর্লভ মাটি, সোনা, মূল্যবান খনিজ পদার্থ। তবে ভেনেজুয়েলার জনগণ সাহসী এবং তারা কখনও আধিপত্যবাদের কাছে নতি স্বীকার করবে না।’
জাতীয় পরিষদের অনুমোদনের পর প্রতিরক্ষা কাঠামো বিলটিতে সইয়ের মাধ্যমে একে আইনে পরিণত করেন প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। পরে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে, অবিলম্বে ভেনেজুয়েলার অখণ্ড প্রতিরক্ষা কমান্ড চালুর নির্দেশ দেন তিনি।
নিকোলাস মাদুরো বলেন, ‘এ আইনের মাধ্যমে, ভেনেজুয়েলার সব সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং জনশক্তিকে একত্রিত করে প্রতিরক্ষা কমান্ডগুলোকে সক্রিয় করতে হবে। আমাদেরকে যদি সশস্ত্র সংগ্রামে যেতে হয়, তবে অবশ্যই দেশপ্রেম এবং সাহসিকতার সঙ্গে এতে বিজয়ী হতে প্রস্তুত থাকতে হবে। তাই প্রতিরক্ষা কমান্ড তৈরির আইনটিতে স্বাক্ষর করেছি। অবিলম্বে এ আইনটি কার্যকর করুন।’
আরও পড়ুন:
প্রেসিডেন্টের আহ্বানের পর দেশজুড়ে নতুন পর্যায়ের সামরিক মহড়া পরিচালনা করেছে ভেনেজুয়েলার সশস্ত্র বাহিনী। গতকাল (মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর) শুরু হওয়া এ মহড়ায় অংশগ্রহণ করে বিভিন্ন ইউনিট। মহড়া চলার সময় দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, দেশ রক্ষায় প্রস্তুত তারা।
ভেনেজুয়েলার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভ্লাদিমির প্যাড্রিনো বলেন, ‘আমরা শান্তিকামী, আমরা বিশ্বের কোথাও যুদ্ধ চাই না। কিন্তু তারা যদি ভেনেজুয়েলাকে স্পর্শ করতে আসে, তাহলে তারা আমাদেরকে এখানেই খুঁজে পাবে। এই দেশে এমন অনেক জনগোষ্ঠী আছে যারা আমৃত্যু দেশ রক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’
শুধু ভেনেজুয়েলা নয়, প্রতিবেশি কলম্বিয়ার সঙ্গেও যুক্তরাষ্ট্রের উত্তেজনা বাড়ছে। ক্যারিবীয় অঞ্চলে জাহাজে হামলা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত মার্কিন সংস্থাগুলোর সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান স্থগিত রাখতে নিজ দেশের জননিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন কলোম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো। যদিও পেত্রোকে গুণ্ডা ও খারাপ লোক বলে অভিহিত করেছেন ট্রাম্প।





