জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে এরমধ্যে নানা সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বিশ্ববাসী। বিশেষজ্ঞরা বারবার বলছেন , বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়তে থাকায় সামনের দিনগুলোতে আরও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে মানুষ। একারণে জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে বিভিন্ন দেশকে আহ্বান জানাচ্ছেন তারা। কিন্তু এতকিছুর পরও অনেক প্রতিষ্ঠান এখনও চালিয়ে যাচ্ছে জীবাশ্ম জ্বালানি পুড়িয়ে শক্তি উৎপাদন। যার ব্যতিক্রম নয় ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় খনি শহর ক্যান্ডিওটার একটি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্ল্যান্ট।
এ সপ্তাহে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দ্যা সিলভা বিভিন্ন দেশে কয়লা খনিগুলো পুনরায় চালুর জন্য ইউক্রেন যুদ্ধকে দায়ী করেন।
কিন্তু তার দেশেরই প্রভাবশালী একটি ব্যবসায়ী গ্রুপ আম্বার, ক্যান্ডিওটা প্ল্যান্টের টারবাইনগুলোকে সচল করতে লক্ষ লক্ষ অর্থ বিনিয়োগ করেছে। তবে পরিবেশগত ঝুঁকি থাকলেও, প্লান্টটিতে কাজ করা হাজার শ্রমিকের জীবিকা ও জাতীয় অর্থনীতিতে এর অবদানের কথা মূল্যায়ন করে এটিকে সচল রাখার পক্ষে অনেকে।
ব্রাজিলের টেকসই কার্বন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফার্নান্দো লুইজ জ্যান কান বলেন, ‘ক্যান্ডিওটা প্ল্যান্ট বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রাণকেন্দ্র। এটি অঞ্চলটির অর্থনীতিকে সচল রেখেছে। এটি বন্ধ হলে বেকারত্ব দেখা দেবে; যা অঞ্চলটিতে বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে। তাই কয়লাচালিত এই শিল্প প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম বজায় রাখা জরুরি।’
আরও পড়ুন:
প্ল্যান্টটি বন্ধ হয়ে গেলে এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় খনি ও সিমেন্ট কারখানাগুলোতে কাজ করা প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক চাকরি হারাতে পারে। তাই এটি সচল রাখার পক্ষে অনেক শ্রমিক নেতারাও।
শ্রমিকদের মধ্যে একজন বলেন, ‘এটি বন্ধ হলে এই শহরের বেশিরভাগ মানুষের ঘুম হারাম হয়ে যাবে। এখানকার ব্যবসা, চাকুরি সবকিছুই প্ল্যান্টটি ঘিরে আবর্তিত। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে অনেকে প্রতিষ্ঠানটিতে কাজ করছে।’
গত বছর ব্রাজিল সরকারের সঙ্গে ক্যান্ডিওটা প্ল্যান্টের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে। এর ফলে স্থানীয় অনেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে এবং অনেক বাসিন্দা কাজ হারিয়ে শহর ছেড়েছেন। ইতোমধ্যে স্থানীয় অর্থনীতির কথা বিবেচনা করে ব্রাজিলের কংগ্রেস প্রতিনিধিরা এটিসহ অন্যান্য কয়লা চালিত প্ল্যান্টের জন্য ২০৪০ সাল পর্যন্ত একটি বিল পাসের অনুমোদন করেছে।
বর্তমানে সৌর চালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় স্থানীয় চাহিদা মেটাতে ক্যান্ডিওটা প্ল্যান্ট বাজারে সরাসরি বিদ্যুৎ বিক্রি করছে। নানা বাঁধার মুখেও এটিসহ ব্রাজিলের আরও পাঁচটি কয়লাভিত্তিক উৎপাদন কেন্দ্র দেশটির মোট বিদ্যুতের তিন শতাংশ সরবরাহ করছে।





