মেগাসিটি নিউইয়র্ক: বৈচিত্র্যে ভরা কোটি মানুষের নগরী

উত্তর আমেরিকা
বিদেশে এখন
0

বিশ্বের প্রায় সব দেশের মানুষ বসবাস করায় পৃথিবীর রাজধানী হিসেবে খ্যাত যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটি। উন্নত জীবনযাপন, কর্ম পরিবেশ থেকে শুরু করে বিনোদন- প্রায় সবক্ষেত্রেই অন্যদের চেয়ে খানিকটা এগিয়ে থেকে স্বমহিমায় দাঁড়িয়ে মেগাসিটি নিউইয়র্ক। কোটি মানুষের এই নগরীতে আছেন কয়েক লাখ বাংলাদেশিও।

সিনেমার দৃশ্যের মতোই সুন্দর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক। যার পরতে পরতে ঐতিহাসিক স্থাপনার ছাপ।

পনের কিংবা ষোল শতকের উপনিবেশ আমল থেকে সমুদ্র জয়ের মধ্য বহু দেশ শাসন করেছে ডাচরা। গড়েছে আজকের উন্নত নেদারল্যান্ডসের ভিত। সেসময় তাদের দখলে ছিল নিউইয়র্কও। যা পরে চলে যায় ইংরেজদের হাতে। গড়ে ওঠে আধুনিক সভ্যতা।

বিশ্বের প্রায় সব দেশের মানুষ বসবাস করায় পৃথিবীর রাজধানী হিসেবেও খ্যাত নিউইয়র্ক। একই ছাতার নিচে নানা ধর্ম, বর্ণ, ভাষা ও সংস্কৃতির মানুষের বসবাসে রয়েছে ব্যতিক্রমী ছোঁয়াও। স্বপ্নের এই মহানগরে কেউ আসেন জীবিকার সন্ধানে, কেউ আবার দাপ্তরিক কাজে।

যুক্তরাষ্ট্রের নির্মাতা আশরাফ আপন বলেন, 'সাতদিন বা দশদিনের জন্য নিউইয়র্কে আসাটা বোকামি হবে। এখন আছি সেন্ট্রাল পার্কে। এটা এত বড় বা এত বিস্তৃত একটা জায়গা, সেখানে এসে এক বা দুই ঘণ্টায় পুরো সেন্ট্রাল পার্কটা দেখে প্রতিটি জায়গাটা এক্সপ্লোর করাটা খুবই ডিফিকাল্ট।'

য্রক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় একজন বলেন, 'নিউইয়র্ক বিশ্বের প্রধান ও বড় শহর। নিউইয়র্ক বন্ধুত্বের শহর।'

মানুষের ব্যস্ততার কারণে, নিউইয়র্ক নির্ঘুম নগরী হিসেবেও পরিচিত। টাইম স্কয়ারের লাল-নীল আলোর মোহে পড়তে বাধ্য বিশ্বের যেকেউ। এখানে ঘুরতে এসে ছবি তোলেন না এমন পর্যটকও খুঁজে যাওয়া যাবে না। অর্থনীতির চাকাও সচল ২৪ ঘণ্টা। যে কারণে নিউইয়র্ককে বলা হয় দ্য ওয়ার্কিং সিটি কিংবা দ্য সিটি নেভার স্লিপস।

সারারাত খোলা থাকে অলিগলির ক্যাফে, রেস্তোরাঁ ও দোকানপাট। সপ্তাহে পাঁচদিন কাজের চাপে দম ফেলার সময় পান না অনেকেই। তবে ছুটির দিনে জীবন উপভোগ করতেও ভোলেন না এখানকার বাসিন্দারা।

যুক্তরাষ্ট্রের নির্মাতা আশরাফ আপন বলেন, 'প্রতিদিন শুধু গাড়িভাড়ার জন্য ৩০০ থেকে ৫০০ ডলার খরচ করতে হবে। আর যদি সাত দিনের একটা প্ল্যান থেকে থাকে সেক্ষেত্রে ৩৪ ডলারে একটা মেট্রোকার্ড পাওয়া যাবে।'

নিউইয়র্কের প্রশাসনিক অঞ্চল- ম্যানহাটন, ব্রুকলিন, দ্য ব্রঙ্কস, কুইন্স এবং স্ট্যাটেন আইল্যান্ডের জীবনধারায় রয়েছে ভিন্নতা। তবে জ্যাকসন হাইটস, ব্রুকলিন, জামাইকা ও দ্য ব্রঙ্কস ঘুরলে মনে হবে যুক্তরাষ্ট্রের বুকে এ যেন একখণ্ড বাংলাদেশ। দেশিয় মাছ থেকে শুরু করে পান-সুপারি- কী নেই এখানে।

যুক্তরাষ্ট্রের মিডিয়া ব্যক্তিত্ব হাসান ইমাম চৌধুরী টিংকু বলেন, 'বাংলা কাবার পাওয়া যায়, বাংলা জামা-কাপড়, ভর্তা -ভাজি থেকে মুরু করে সব পাওয়া যায়। এমনকি কচু পাতার ভর্তাও পাওয়া যায়।'

দ্য বিগ অ্যাপল খ্যাত এ শহরে, জাতিসংঘের সদর দপ্তর অবস্থিত। গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে পরিচিত স্ট্যাচু অব লিবার্টি, ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার বা বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র, জনপ্রিয় ট্রাম্প সেন্টার, ব্রুকলিন ব্রিজ, বিশ্ববিখ্যাত কয়েকটি জাদুঘরসহ আরও কত স্থাপনা যে রয়েছে তা বলে শেষ করার মতো না।

পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মানুষ যে কয়টি লাইব্রেরিতে গেছেন, তার মধ্যে নিউইয়র্ক পাবলিক লাইব্রেরি অন্যতম। এছাড়া নাইন-ইলেভেন মেমোরিয়াল দেখতে ভিড় করেন অনেকে।

আটলান্টিকের তীর ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা ব্রুকলিনের উঁচু উঁচু ভবনের অপূর্ব সৌন্দর্য একসঙ্গে উপভোগ করার অন্যতম স্থান লিবার্টি আইল্যান্ড। কেউ বলেন রাতের নিউইয়র্ক বেশি সুন্দর, কেউ বলেন দিনের নিউইয়র্কের কথা। যেখানে একবার এলে, আসতে মন চাইবে বারবার।

এসএস