বিমান, রোটোরক্রাফট, রকেট, স্যাটেলাইট থেকে শুরু করে ক্ষেপণাস্ত্র পর্যন্ত নকশা, উৎপাদন ও বিক্রির জন্য পৃথিবী বিখ্যাত নাম বোয়িং। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটির নকশায় নির্মিত মহাকাশযান বোয়িং স্টারলাইনার, যার কাজ পৃথিবী থেকে আন্তর্জাতিক মহাকাশকেন্দ্র আইএসএস ও অন্যান্য নিম্ন ভূ-কক্ষপথে নভোচারীদের আনা-নেয়া। গেলো বছর জুনে স্টারলাইনারের পরীক্ষামূলক ফ্লাইটেআইএসএসে পৌঁছে আটকা পড়লে বিশ্বের নজরে আসেন দুই মার্কিন নভোচারী সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোর। ঘরে ফেরার বিকল্প যানের জন্য অপেক্ষা করতে করতে পেরিয়ে যায় নয়-নয়টি মাস।
যুক্তরাষ্ট্রের নাসার নভোচারী সুনিতা উইলিয়ামস বলেন, 'বিছানায় শুয়ে ভালো লেগেছে। নয় মাসে প্রথমবার বিছানায় শুতে পারার যে অনুভূতি যে কী দারুণ ছিল! শুধু শুয়ে থেকে পুরো দিন পার করেছি। এরপর উঠে দাঁড়ানোর আর চলাফেরার চেষ্টা করেছি, মাধ্যাকর্ষণের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে।'
মহাকাশে দীর্ঘসময় পার করে পৃথিবীতে ফিরে পোষা কুকুরের সাথে হেঁটে আর পরিবারের সাথে সময় কাটিয়েছেন দুই নভোচারী। বোয়িংয়ের ত্রুটিপূর্ণ স্টারলাইনার মহাকাশযানের প্রথম যাত্রী সুনিতা ও বুচ। আরেক মহাকাশ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের ক্যাপসুলে চড়ে পৃথিবীতে ফেরার পর নাসার নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষায় বেশ কয়েকদিন পার করতে হয়েছে তাদের। এরপরই মিলেছে পরিবারের কাছে ফেরার ছাড়পত্র। আরও পরে কর্মক্ষেত্রে যোগ দিয়ে দুই নভোচারী জানান, আইএসএস ছাড়িয়ে মহাকাশের আরও গভীরে যেতে স্টারলাইনারের উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন নিয়ে কাজ করবেন তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের নাসার নভোচারী বুচ উইলমোর বলেন, 'সৌর ব্যবস্থা নিয়ে গবেষণার বড় বড় লক্ষ্য আছে আমাদের। চাঁদে ফিরতে চাই, মঙ্গলে যেতে চাই।'
মার্কিন নৌবাহিনীর সাবেক টেস্ট পাইলট সুনিতা ও বুচ স্টারলাইনারের টেস্ট ক্রু হিসেবে বোয়িংয়ে যোগ দেন ২০২২ সালে। ২০২০ সাল থেকে স্পেসএক্সের ক্রু ড্রাগন বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ অভিযানের একমাত্র বাহন বলে আইএসএসে যাওয়াআসার দ্বিতীয় বাহন অনেকদিন ধরেই খুঁজছে নাসা। পৃথিবীর কক্ষপথে ফুটবল মাঠের সমান গবেষণাগার আইএসএসে ২৫ বছর ধরে আনাগোণা রয়েছে নভোচারীদের।