এবার কোন দেশের সরকার প্রধান কোন দেশ থেকে জ্বালানি তেল আমদানি করবে, সেই সিদ্ধান্তও পরোক্ষভাবে চাপিয়ে দিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেয়া এক বার্তায় ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ভেনেজুয়েলা থেকে যেসব দেশ জ্বালানি তেল বা গ্যাস কিনবে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সেসব দেশকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক দিতে হবে।
ট্রাম্প বলেন, ভেনেজুয়েলা বরাবরই যুক্তরাষ্ট্রের শত্রুভাবাপন্ন দেশ। অভিযোগ করেন, কোন প্রমাণ ছাড়াই সেদেশের সন্ত্রাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছে তারা। পাশাপাশি তিনি বলেন, অনেক দেশের ওপর থেকে আমদানি শুল্ক কমানোর পরিকল্পনা করছেন তিনি। যা আগামী ২রা এপ্রিল ঘোষণা করা হবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্কের পরিবর্তে শুল্কারোপ করা হবে। যা দোসরা এপ্রিল থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। সোমবার সুর নরম করে তিনি বলেন, অনেক দেশ এই রিসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ থেকে মুক্ত থাকবে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে ফার্মাসিউটিক্যালস পণ্য, অটোমোবাইল খাত আর অ্যালুমিনিয়ামেও শুল্কারোপ করা হতে পারে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘গাড়িতে দ্রুতই শুল্কারোপ করবো। যেভাবে স্টিল আর অ্যালুমিনিয়ামে করেছি। ফার্মাসিউটিক্যালস পণ্যেও শুল্কারোপ করা হবে। যুদ্ধ হলে আমার দেশে স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম, ইস্পাত সবই লাগবে। ভবিষ্যতে শুল্কারোপ হবে। এখান থেকেই ডলার আসবে। চাকরির বাজার সুরক্ষিত থাকবে।
একই দিনে নতুন সংস্থা এক্সটার্নাল রেভিনিউ সার্ভিস যাত্রা শুরু করবে। এই সংস্থার কাজ হবে আমদানি শুল্ক সংগ্রহ। যদিও সমালোচকরা বলছেন, ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস এন্ড বর্ডার প্রোটেকশন এখন শুল্কের যাবতীয় বিষয়ের তদারকি করে। কিন্তু এই কাজের জন্য নতুন সংস্থা তৈরিতে কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন।
গেলো বছর যুক্তরাষ্ট্রে শীর্ষ জ্বালানি তেল রপ্তানিকারক দেশ ছিলো ভেনেজুয়েলা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ৫৬০ কোটি ডলারের জ্বালানি তেল ও গ্যাস আমদানি করেছে দেশটি। বাইডেন প্রশাসন ক্ষমতায় এসে ২০২৩ সালে জ্বালানি তেল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে দেন।
কিন্তু ২০২৪ সালের এপ্রিলে আবারও নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ে ভেনেজুয়েলা। দেশের প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়নি দেশে।
যদিও নিষেধাজ্ঞার পরও যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার তেল আমদানি করেছে জয়েন্ট ভেনচারে জ্বালানি প্রতিষ্ঠান শেভরনকে তেল উত্তোলনের লাইসেন্স দিয়ে।
এদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন ইস্পাতের প্ল্যান্ট তৈরিতে ২ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে তারা। লুইজিয়ানায় তৈরি হতে যাওয়া এই প্ল্যান্টের বার্ষিক উৎপাদন হবে ২৭ কোটি টন স্টিল।