যুক্তরাষ্ট্র হাত ছেড়ে দেয়ায় সহায়তার জন্য ইউরোপের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। এরই ধারাবাহিকতায় ফ্রান্সে অবস্থান করছেন ভলোদিমির জেলেনস্কি।
শান্তি ও সুরক্ষা সম্মেলনের একদিন আগে বুধবার (২৭ মার্চ) বৈঠক করেন দুই দেশের সরকার প্রধান। এসময়, ক্রেমলিনের শর্ত ছাড়াই রাশিয়াকে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রাজি করাতে যুক্তরাষ্ট্র চাপ প্রয়োগ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন জেলেনস্কি। অন্যদিকে ইউক্রেনকে ২১৫ কোটি মার্কিন ডলারের অতিরিক্ত সামরিক সহায়তা প্রদানের ঘোষণা দেন ম্যাক্রোঁ।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘ইউক্রেনের জন্য আমাদের সহায়তা অব্যাহত রাখা জরুরি। এ লক্ষ্যে ২১৫ কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা ঘোষণা করছি। এর মধ্যে থাকবে অ্যান্টি ট্যাংক মিসাইল, সার্ফেস টু এয়ার মিসাইল, আর্মার্ড ভেহিকেল, ড্রোন ও মিরাজ ফাইটার জেট।’
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস, রাশিয়াকে শর্তহীন যুদ্ধবিরতিতে রাজি করানোর সক্ষমতা যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে। মস্কোর আগ্রাসন যতদিন চলবে, ততদিন নিষেধাজ্ঞা থাকা প্রয়োজন। বেসামরিক স্থাপনায় হামলা বন্ধের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পেলেও রাশিয়ার কাছ থেকে পাইনি।’
এদিকে সম্মেলন শুরুর কিছুক্ষণ আগে জেলেনস্কি অভিযোগ করেন, ক্রেমলিনের সুরেই কথা বলছেন ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফ। যা শান্তি প্রক্রিয়ায় বাধা তৈরি করতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘সত্যি বলতে উইটকফের কণ্ঠে প্রায়ই ক্রেমলিনের আখ্যানগুলো খুঁজে পাওয়া যায়। এটি শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যাঘাত তৈরি করবে, দূরত্ব বাড়াবে। আমাদের পক্ষ থেকে তথ্যের প্রবাহ বাড়ানো ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই। যুক্তরাষ্ট্রকে আমাদের পক্ষে বা দুই দেশের মধ্যে থাকতে হবে। রাশিয়ার পক্ষে যাওয়া চলবে না।’
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ বৈঠকের আলোচ্য সূচিতেও ছিল ইউক্রেন যুদ্ধবিরতির প্রসঙ্গ। কৃষ্ণ সাগরে হামলা বন্ধে দুই দেশের সম্মতিকে স্বাগত জানিয়েছে জাতিসংঘ। যদিও বৈঠকের সময় মস্কো ও কিয়েভ প্রতিনিধির বাকযুদ্ধই জানান দেয় সম্মতির বিষয়টি চুক্তিতে পৌঁছানো এখনো অনেক সময়ের বিষয়।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, ‘কৃষ্ণ সাগরে বেসামরিক যান ও বন্দরের স্থাপনায় হামলা বন্ধে সম্মতিতে নৌপথের স্বাধীনতা নিশ্চিত হলো। এর মাধ্যমে বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা ও আমদানি রপ্তানি প্রবাহের গতি ধরে রাখা সম্ভব হবে। আশা করি বিশ্ববাজারের বাণিজ্য রুটে বড় এই প্রভাব ইতিবাচক হিসেবে কাজ করবে।’
ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সহায়তায় চলতি বছর আরও ৩ হাজার সেনা প্রেরণ করেছে উত্তর কোরিয়া। মোট ১৫ হাজার সেনার মধ্যে হতাহত প্রায় ৪ হাজার। এমনটাই দাবি করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। এর মধ্যে ইউক্রেনের খারকিভ শহরে শতাধিক ড্রোনের মাধ্যমে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন বেসামরিক ইউক্রেনীয়।