হামাস নির্মূলের নামে গাজায় গণহত্যা শুরু করেছিলো ইসরাইল। এবার একই পথে হাঁটছে যুক্তরাষ্ট্র। হুতিদের নির্মূল আর ভূমধ্যসাগরের বাণিজ্যিক রুট নিরাপদের নামে ইয়েমেনে ভয়াবহ বিমান হামলা চালাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। মার্কিন সামরিক বাহিনী ইয়েমেনে হুথি নিয়ন্ত্রিত ৪০ টি স্থাপনায় হামলার দাবি করেছে। প্রতিক্রিয়ায় হুতিরাও হামলা করছে ইসরাইল আর লোহিত সাগরে।
বৃহস্পতিবার প্রথমে তেল আবিবের কাছে বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরসহ ইসরাইলের কয়েকটি সামরিক স্থাপনা আর লোহিত সাগরে মার্কিন বিমানবাহী রণতরি ইউএসএস হ্যারি ট্রুম্যানে মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালায় হুথি বিদ্রোহীরা। তাদের দাবি, কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে সংঘাত।
জবাবে শুক্রবার ইয়েমেনের রাজধানী সানায় বিমান হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। গেলো ১৯ মার্চ ইয়েমেনে অতর্কিত বিমান হামলা আর হতাহতের ঘটনার পর থেকে নিয়মিত বিরতিতে চলছে হুথি - যুক্তরাষ্ট্র সংঘাত।
হুথি সামরিক শাখার মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারেয়া বলেন, 'ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষের প্রতি সংহতি জানিয়ে বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে আর তেল আবিবে ধুলফিকার আর প্যালেস্টাইন টু ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা হয়েছে। অপারেশন সফল হয়েছে। মিসাইল, ড্রোন আর নৌবাহিনী, একযোগে অপারেশন চালাচ্ছে। লোহিত সাগরে মার্কিন রণতরিতেও হামলা হচ্ছে। মার্কিন আগ্রাসন সহ্য করা হবে না।'
লেবাননও ধীরে ধীরে অস্থিতিশীল হচ্ছে। হিজবুল্লাহ দায় স্বীকার না করলেও লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল থেকে অনবরত রকেট হামলা হচ্ছে ইসরাইলে। তেল আবিব জানায়, এই রকেটগুলো ভূপাতিত করেছে আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী।
এদিকে গাজায় নির্বিচারে গণহত্যা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। বৃহস্পতিবার একরাতেই উপত্যকাটির উত্তর থেকে দক্ষিণে হামলায় নতুন করে প্রাণ গেছে অনেকের। ১৮ মার্চ থেকে আবারও উপত্যকায় সেনা অভিযান শুরুর পর প্রাণ গেছে ৮ শতাধিক ফিলিস্তিনির।
এদিকে ইয়েমেনে হামলা চালিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার বার্তা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউজে আয়োজিত ইফতারে তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, 'মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আমার প্রশাসন কাজ করছে। ঐতিহাসিক আব্রাহাম অ্যাকর্ড প্রতিষ্ঠা করছি। শূন্যতা পূরণে বাইডেন কিছুই করেনি। খুব দ্রুতই লক্ষ্য পূরণে সফল হবো।'
মধ্যপ্রাচ্য উত্তেজনার এমন পরিস্থিতিতে পরমাণু প্রকল্প ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাঠানো চিঠির জবাব দিয়েছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যতক্ষণ সর্বোচ্চ যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে চাপ আর সামরিক হস্তক্ষেপের হুমকি থাকছে ততক্ষণ পর্যন্ত ওয়াশিংটনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় যাওয়া সম্ভব নয়। এমন অবস্থায় গোটা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পারদ পৌঁছেছে চরমে।