উত্তর আমেরিকা
বিদেশে এখন
0

বিদেশি অর্থ সহায়তা কার্যক্রম স্থগিত করছে ট্রাম্প প্রশাসন

বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশের দায়িত্ব গ্রহণের কয়েক দিনের মধ্যেই বিদেশি সব ধরনের অর্থ সহায়তা কার্যক্রম স্থগিত করে দিচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। ফাঁস হওয়া নথিতে বলা, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্ক রুবিও বলেছেন, খাদ্য আর দুই দেশে সামরিক সহায়তা ছাড়া তিন মাসের জন্য স্থগিত হচ্ছে এই কার্যক্রম। অথচ ইউক্রেন ইস্যুকে কেন্দ্র করে ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র রপ্তানি অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চেষ্টা করছেন ইউক্রেন দখলের, ইসরাইলের চেষ্টা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখলের। অথচ এই দুই ইস্যুতে বরাবরই দুই নীতি মার্কিন প্রশাসনের। নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এসে তা আরও স্পষ্ট করলেন। ফাঁস হওয়া সরকারি নথি থেকে জানা গেলো, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বন্ধ হচ্ছে সব ধরনের আর্থিক সহায়তা। তবে এই শর্ত ইউক্রেনের জন্য প্রযোজ্য কিনা সেই বিষয়টি স্পষ্ট না করলেও জানানো হয়েছে, ইসরাইল আর মিশর এই শর্তের আওতায় নেই।

সরকারি কর্মকর্তা আর বিভিন্ন দেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূতদের কাছে পাঠানো সেই ফাঁস হওয়া নথিতে বলা হয়, ৯০ দিনের জন্য চলমান সব বিদেশি সহায়তা প্রকল্পের পাশাপাশি নতুন তহবিল অনুমোদন বাতিল করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশি সহায়তা কার্যালয় আর মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী মার্ক রুবিও'র নির্দেশনায় বলা হয়, সামরিক সহায়তা পারে ইসরাইল আর মিশর।

এই উদ্যোগের কারণে কোটি কোটি ডলারের সহায়তা পড়ে যাবে হুমকিতে। এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বড় দাতা দেশ যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৩ সালে সারাবিশ্বে ৬ হাজার কোটি ডলারের বেশি অর্থ সহায়তা দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন।

যা দেশের মোট বাজেটের ১ শতাংশ। পররাষ্ট্র দপ্তরের নথিতে বলা হয়, নতুন কোন তহবিল তদারকির বাইরে অনুমোদন হবে না। মার্ক রুবিও বলেন, তহবিল তখনই অনুমোদন হবে, যখন তা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য লাভজনক হবে।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, মার্কিন প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে সারাবিশ্বে অনেক মানুষের মৃত্যু হতে পারে। এই সিদ্ধান্তের অর্থ আন্তর্জাতিক সব সংস্থাকে অন্য দেশ বা সংস্থার কাছে তহবিল খুঁজতে হবে।

জাতিসংঘ বলছে, এই ধরনের সিদ্ধান্ত আলোচনার মধ্য দিয়ে হওয়া উচিত। কিন্তু এই রাষ্ট্রগুলো থেকে তা আশা করাই বোকামি। এই সিদ্ধান্তের আওতায় ইসরাইল আর মিশর না থাকায় কঠোর সমালোচনা হচ্ছে। ইউক্রেনের বিষয়ে স্পষ্ট কোন দিক নির্দেশনা না আসায় বলা হচ্ছে, কিয়েভের জন্য বন্ধ হতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্যের দুয়ার।

অথচ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ২০২৪ সালে অস্ত্র বাণিজ্যে রেকর্ড করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গেলো বছর জো বাইডেন প্রশাসন বিক্রি করেছে প্রায় ৩২ হাজার কোটি ডলারের অস্ত্র।

বিশ্বে অস্থিরতার বাড়ার সুযোগে চুটিয়ে ব্যবসা করে নিয়েছে লকহেড মার্টিন, জেনারেল ডায়নামিক্স আর নর্থরোপ গ্রুম্যান। যদিও ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বাণিজ্য কেমন হবে, তা নিয়ে এখনও রয়েছে ধোঁয়াশা।

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রচারণায় বলেছেন উত্তর আটলান্টিক প্রতিরক্ষা জোট ন্যাটো সদস্যভুক্ত সব দেশকে বাজেটের ৫ শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করতে হবে।

গেলো বছর তুরস্ককে ২ হাজার ৩শ' কোটি ডলারের এফ সিক্সটিন ফাইটার জেট, ইসরাইলকে ১ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের এফ ফিফটিন ফাইটার জেট আর রোমানিয়াকে আড়াই হাজার কোটি ডলারের আব্রামস ট্যাঙ্ক দেয়ার চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

ক্রয়াদেশ নেয়া হচ্ছে, আর্টিলারি রাউন্ড, প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা আর সাজোঁয়া যান। এই সহায়তাগুলো ক্রেতা দেশ পাবে কিনা, তা নিয়েও রয়েছে সংশয়।

এএইচ