ইউক্রেনকে প্রায় আড়াই হাজার কোটি ডলার সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি

0

ইউক্রেনকে নতুন করে প্রায় ২ হাজার ৪শ' কোটি ডলার মূল্যের সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের মিত্ররা। রাশিয়ার পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির পথে হাটার কোনো লক্ষণ না দেখায় কিয়েভকে শক্তিশালী করতে নতুন করে সহায়তার হাত বাড়ালো তারা। যুক্তরাজ্য-জার্মানির চেষ্টায় ব্রাসেলসে হওয়া রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে আসে এ সিদ্ধান্ত।

যুদ্ধবিরতি নিয়ে দৌড়ঝাঁপ শুরু হলেও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের কোনো আভাস মিলছে না। বরং মার্কিন সামরিক সহায়তা বন্ধে রুশ বাহিনীকে মোকাবিলায় রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে। প্রতিদিনের হামলা-পাল্টা হামলায় বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের সংখ্যা।

এ অবস্থায় ইউক্রেনকে শক্তিশালী করতে শুক্রবার ব্রাসেলসের ন্যাটো সদর দপ্তরে জরুরি বৈঠকের আয়োজন করে যুক্তরাজ্য-জার্মানি। রুদ্ধদ্বার বৈঠকে অংশ নেন ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা যোগাযোগ গ্রুপ- ইউডিসিজি'র প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ প্রায় ৫০টি দেশের প্রতিনিধিরা। মস্কোর বিরুদ্ধে কিয়েভকে শক্তিশালী করতে প্রায় ২ হাজার ৪শ' কোটি ডলার মূল্যের সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেয় মিত্র দেশগুলো। এরমধ্যে ৫৮ কোটি ডলার মূল্যের নতুন সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি যুক্তরাজ্যের।

যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন হিলি বলেন, ‘ইউক্রেনের সামরিক সহায়তার নতুন প্রতিশ্রুতি মোট ২১ বিলিয়ন ইউরোরও বেশি বা প্রায় ২ হাজার ৪শ' কোটি ডলার। যা ইউক্রেনের সামরিক তহবিলে রেকর্ড বৃদ্ধি। আমরা সম্মুখ যুদ্ধে সমর্থনও বৃদ্ধি করছি।’

মোট সহায়তার মধ্যে ২০২৯ সাল পর্যন্ত ইউক্রেনকে এক হাজার ২৫০ কোটি ডলারের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জার্মানি। নতুন এ সামরিক সহায়তার তালিকায় রয়েছে আইরিশ-টি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ অত্যাধুনিক লেপার্ড ওয়ানএফাইভ ট্যাংকও।

জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিয়াস পিস্তোরিয়াস বলেন, ‘আমরা আরো ৩০০ গাইডেড মিসাইলসহ ৪টি আইরিশ-টি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাঠাবো। এছাড়া কাঁধ থেকে আকাশে নিক্ষেপ যোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র থাকবে ১২০টি। পাশাপাশি সামরিক সহায়তা হিসেবে ৩০০টি ড্রোন, ২৫টি যুদ্ধযান, ১৫টি লেপার্ড ওয়ান ট্যাংক, ১৪টি আর্টিলারি সিস্টেম, ১০০টি গ্রাউন্ড নজরদারি রাডার এবং অতিরিক্ত এক লাখ রাউন্ড আর্টিলারি গোলাবারুদ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে জার্মানি থেকে ইউক্রেনে প্রায় ৫ লাখ রাউন্ড গোলাবারুদ সরবরাহ হয়েছে।’

যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে রাশিয়ার পক্ষ থেকে কোনও ইতিবাচক লক্ষণ না দেখায় মস্কোর উপর চাপ সৃষ্টি করতেই এসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানান ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কাজা ক্যালাস।

ইইউর পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কাজা ক্যালাস বলেন, ‘আমরা ইউক্রেনের পাশে আছি। এটা বোঝাতেই এই বৈঠক। কারণ ইউক্রেন নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার ৪ সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও রাশিয়ার পক্ষ থেকে কোনও ইতিবাচক লক্ষণ দেখতে পাইনি। তাই আমাদের সত্যিই রাশিয়ার উপর চাপ সৃষ্টি করা দরকার।’

মিত্ররা সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়ায় ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ।

ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ বলেন, ‘মিত্রদের পদক্ষেপে আমরা কৃতজ্ঞ। এটি আমাদের পাওয়া বৃহত্তম সহায়তাগুলোর মধ্যে একটি। সহায়তা প্রদানকারী প্রতিটি দেশকে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ।’

এর আগে এই ধরনের বৈঠক মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হলেও এবার হয়েছে যুক্তরাজ্য ও জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বে।

এএইচ