উত্তর আমেরিকা
বিদেশে এখন
0

জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলে ট্রাম্পের আদেশ আদালতে স্থগিত

যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানদের জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ ১৪ দিনের জন্য স্থগিত করেছে দেশটির আদালত। যদিও আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করবেন বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এদিকে, সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে বিশ্বনেতাদের উদ্দেশ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, মার্কিন মুলুকে কারখানা স্থাপন করে নিজস্ব পণ্য উৎপাদন শুরু করলে চড়া আমদানি শুল্ক আরোপ করবেন।

২০ জানুয়ারি শপথ নেয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানদের জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ বাতিল করে নির্বাহী আদেশ জারি করেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সাথে সাথে এই নির্বাহী আদেশকে চ্যালেঞ্জ জানায় ডেমোক্র্যাট–নিয়ন্ত্রিত ২২ অঙ্গরাজ্য। আইনি লড়াইয়ে সামিল হয় বিভিন্ন নাগরিক অধিকার সংগঠনও।

এরই ধারাবাহিকতায় ওয়াশিংটনের ডিসট্রিক্ট অ্যাটর্নি নিক ব্রাউন ও ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রণাধীন ৩ স্টেট ওরেগন, অ্যারিজোনা, ইলিনয়ের আবেদন আমলে নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে ঐ নির্বাহী আদেশ ১৪ দিনের জন্য স্থগিতের রায় দেন সিয়াটলের বিচারক জন কফেনোর। রায়ের পর অ্যাটর্নি জেনারেল নিক ব্রাউন দাবি করেন, অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানদের জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল কার্যকর হলে, তা সংবিধান পরিপন্থী হতো। যদিও প্রতিক্রিয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, অবিলম্বে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে তার প্রশাসন।

অ্যাটর্নি জেনারেল, ওয়াশিংটনের অ্যাটর্নি জেনারেল নিক ব্রাউন বলেন, ‘আমরা সফলভাবে প্রথম ধাপ সম্পন্ন করেছি। তবে বিচারপতির বেঞ্চ থেকে যখন বলা হলো, ৪০ বছরে তারা এমন সংবিধান পরিপন্থী কোনো নির্বাহী আদেশ দেখেননি, তখনই সবাই এই রায়ের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে পেরেছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা অবশ্যই এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব। তারা সিয়াটলের সুনির্দিষ্ট একজন বিচারকের কাছে আবেদন জমা দিয়েছেন, তাই না? কাজেই রায় যে আমাদের বিপক্ষে যাবে- এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।’

এদিকে, এবার ইউক্রেন ইস্যুতে মুখ খুলেছেন ট্রাম্প। যুদ্ধ বন্ধে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে সাক্ষাৎ করতে উদগ্রীব হয়ে আছেন বলে জানান তিনি। পাশাপাশি পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে অর্থ বরাদ্দ দেয়ার বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি বলেও মন্তব্য করেন ট্রাম্প।

এছাড়া, গর্ভপাতের বৈধতার বিরুদ্ধে মার্চ অফ লাইফে অংশ নিয়ে আটক হওয়া বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ২৩ জনকে ক্ষমা করে নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন নয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

এদিকে, সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনে বিশ্বনেতা ও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারদের নজর ছিল যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভাষণের ওপর।

বৃহস্পতিবারের এই ভাষণে ট্রাম্প অভিযোগ করেন ইউরোপের দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করছে না। বিশেষ করে মার্কিন পণ্যে ইউরোপে পাঠাতে বেগ পেতে হচ্ছে।

তবে তিনি নিশ্চিত করেছেন, এত কিছুর পরেও ইউরোপে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের দ্বিতীয়বার ভাববে না ওয়াশিংটন।

এছাড়া, মার্কিন মুলুকে কারখানা স্থাপন করে পণ্য উৎপাদন না করলে চড়া আমদানি শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন ট্রাম্প। বিশ্বজুড়ে তেলের দাম বাড়তে থাকায় এ নিয়ে উষ্মাও প্রকাশ করতে দেখা গেছে ট্রাম্পকে।

যদিও তিনি নিশ্চিত করেছেন, কানাডা থেকে তেল কেনার কোনো পরিকল্পনা নেই প্রশাসনের। এদিকে, কানাডাকে সতর্ক করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য হওয়ার প্রস্তাবে সম্মত না হলে ক্যানাডিয়ান পণ্যে বাড়তি আমদানি শুল্ক আরোপ করবেন।

এএইচ