উত্তর আমেরিকা
বিদেশে এখন
0

দ্বিতীয় দিনই ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা

প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার দ্বিতীয় দিনই ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা হয়েছে। জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়া বাতিল ইস্যুতে ২২ টি অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল করেছেন মামলা। পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ওয়াশিংটন। এদিকে, দ্বিতীয় দিনে চীন আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যে শুল্কারোপের আভাস দিয়েছেন তিনি। ঘোষণা দিয়েছেন, তার আমলেই যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি হবে বিশ্বের সর্ববৃহৎ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কোম্পানি। শীর্ষ তিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এতে বিনিয়োগ করবেন ৫০ হাজার কোটি ডলার।

বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর অব্যাহতি পেয়েছিলেন দুর্নীতির মামলাগুলো থেকে। প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার দুইদিনের মধ্যেই আবারও তার নির্বাহী আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে হলো মামলা। জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়া বন্ধে যে নির্বাহী আদেশে প্রথম দিনই তিনি স্বাক্ষর করেছিলেন, এই নির্বাহী আদেশ স্থগিতে মামলা করেছেন ডেমোক্রেট অধ্যুষিত ২২ টি অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলরা।

জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়া বাইডেনের নির্বাহী আদেশকে উল্টে দেয়ায় তার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেলরা। তাদের দাবি, এই নির্বাহী আদেশের বাস্তবায়ন হলে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর জন্ম নেয়া দেড় লাখ শিশু নাগরিকত্ব পাবে না। যদিও হোয়াইট হাউজ বলছে, এই বিষয়ে আদালতে যেতেও প্রস্তুত তারা। এই সিদ্ধান্তকে মার্কিনরা স্বাগত জানালেও এমন নির্বাহী আদেশে পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়ে গেছেন অভিবাসীরা।

এক মার্কিন নাগরিক বলেন, ‘জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়ার ইস্যুটা এই দেশে আসার লুপহোল, তারা আসে, বাচ্চা জন্ম দেয়, যা খুশি তাই করে। অথচ এখন দেশের নাগরিকদের ভালো রাখতে অর্থ ব্যয় করা উচিত।’

এদিকে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের প্রথমদিন ২৬ টি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করে পুরো বিশ্বকে হতবাক করে দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দ্বিতীয় দিনও একের পর এক দিয়ে যাচ্ছেন চমকে দেয়ার মতো ঘোষণা। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন ইস্যুতে বলেছেন, পুতিন যদি আলোচনায় রাজি না হয় মস্কোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দেবেন তিনি। আবারও বলেন, তিনি ক্ষমতায় থাকলে এই যুদ্ধ শুরুই হতো না।

এদিকে, মেক্সিকো-কানাডার পণ্যে শুল্কারোপের নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষরের পর এবার চীনকেও হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। চীনা আমদানি পণ্যে পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে আরোপ করা হতে পারে ১০ শতাংশ শুল্ক। শুল্ক আরোপ করা হবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আমদানি পণ্যেও। এসময় ইউরোপীয় ইউনিয়নকে নিয়ে কটূক্তিও করেন তিনি। বলেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন যুক্তরাষ্ট্রের বড় অপব্যবহারকারী।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘সব দেশ অপব্যবহারকারী। শুধু চীন না, ইউরোপীয় ইউনিয়নও আমাদের জন্য ভালো না। তারা আমাদের মূল্যায়ন করে না। তারা আমাদের গাড়ি, কৃষিপণ্য কোনোকিছুর তোয়াক্কা করে না। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আমাদের ৩৫ হাজার কোটি ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি। তাই আমরা শুল্কারোপ করবো। আপনারা সৎ না থাকলে আমরাও থাকবো না।’

দ্বিতীয় দিনের বক্তব্যে ইলন মাস্ককে টিকটক কেনারও প্রস্তাব দিয়ে বসেন ট্রাম্প। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইস্যুতে ট্রাম্প বলেন, আগামী চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রে এআই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তৈরিতে ৫০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে ওপেন এআই, সফটব্যাংক আর ওরাকল। যাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে ১ লাখ মানুষের।

বিশ্বের শীর্ষ তিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকে স্বাগত জানাচ্ছি।ইতিহাসের বৃহত্তম এআই কার্যালয় তৈরি হবে। স্টারগেট তৈরি হবে আমাদের দেশে। সবকিছুই এই দেশে গড়ে নিতে চাই আমরা। চীন প্রতিযোগী, অন্য দেশও প্রতিযোগী। আমি অনেক জরুরি ঘোষণা দিয়ে সহযোগিতা করবো। এআই প্ল্যান্ট দেশেই তৈরি হবে।

ক্যাপিটল হিল হিলের দাঙ্গায় জড়িত থাকার অভিযোগে বন্দি ১৫শ'র বেশি মার্কিনকে মুক্তি দেয়া ইস্যুতে ট্রাম্প বলেন, তারা বছরের পর বছর জেল খেটেছেন, যেখানে এই দেশে খুনিরা বাইরে ঘুরে বেড়ায়।

এএম