উত্তর আমেরিকা
বিদেশে এখন
0

নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষরের পরই বিভিন্ন দেশে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ শুরু

দেশের মানুষের জন্য সমৃদ্ধ আমেরিকা গড়ার প্রত্যয় নিয়ে ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন। কিন্তু নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষরের পরপরই বিভিন্ন দেশে শুরু হয়েছে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ। পানামা দখল আর গ্রিনল্যান্ড কিনে নেয়ার হুমকিতে শঙ্কায় রয়েছেন সেখানকার সাধারণ মানুষ। অভিবাসীদের বিতাড়িত করার সিদ্ধান্ত নেয়ায় ক্ষোভে রাস্তায় নেমেছেন মেক্সিকোর সাধারণ মানুষ।

মেক্সিকো আর কানাডার পণ্যে শুল্কারোপ, পশ্চিমতীরে ইসরাইলি দখলদারদের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, দেশ থেকে লাখ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে ফেরত পাঠানোসহ বিতর্কিত নানা নির্বাহী আদেশে শপথ গ্রহণের পরপরও স্বাক্ষর করে বসেন নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রকে নিতে হবে অনন্য উচ্চতায়। সেই লক্ষ্য পূরণ করতে গিয়ে অন্য কোন দেশের ক্ষয়ক্ষতির যেন তোয়াক্কাই করছেন না তিনি।

তাইতো ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে একদিকে যেমন ওয়াশিংটন ডিসিসহ যুক্তরাষ্ট্রের আনাচে কানাচে উল্লাস, অন্যদিকে অভিবাসীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। কখন চলে যেতে হয় এই দেশ ছেড়ে। নির্বাচিত হওয়ার পরই তার অভিবাসন বিরোধী নীতি নিয়ে সরব অবস্থানে অনেক দেশের সাধারণ মানুষ।

ট্রাম্প নতুন অভিবাসন নীতিতে স্বাক্ষরের পর মেক্সিকো শহরে মার্কিন দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ করেন সাধারণ মেক্সিকানরা। ট্রাম্পের আদলে পুতুল বানিয়ে সেটি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেন তারা।

মেক্সিকো সীমান্তে জরুরি অবস্থা জারি, সেখানে সেনা মোতায়েন আর অভিবাসন-প্রত্যাশী মেক্সিকানদের সীমান্তে অবস্থানের নির্দেশনা দেয়ায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নেমেছেন মেক্সিকানরা। গালফ অব মেক্সিকোকে গালফ অব আমেরিকা নাম দেয়ার ট্রাম্পের ঘোষণার চরম সমালোচনা করেন তারা।

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সীমান্তে সেনা মোতায়েন করতে দেবো না। আমরা স্বাধীন, অন্য দেশের সীমান্তে আমরা হস্তক্ষেপ করি না। গালফ অব মেক্সিকোর নাম পাল্টানোর কথা যে বলে, সে নিশ্চয়ই মাদকাসক্ত।

সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া মানে বিবর্তন থামিয়ে দেয়া। এটা মানবাধিকারকে আঘাত করার মতোই, আর যুক্তরাষ্ট্র তা সমর্থন করে।

পানামা খাল দখলের হুমকির কারণে ট্রাম্পের শপথের পর বিক্ষোভে নেমেছেন পানামা শহরের সাধারণ মানুষ। তারা বলছেন, ট্রাম্পের এই ঘোষণা কোনভাবেই মেনে নেয়া সম্ভব নয়।

ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনে ইউরোপের প্রযুক্তি খাতকে চড়ামূল্য দিতে হতে পারে, এমন আশঙ্কায় ব্রাসেলসে মার্কিন দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ করেছেন অনেকে। সব দপ্তরকে একাই নিয়ন্ত্রণ করে ট্রাম্প দেশের গণতন্ত্রকে হুমকিতে ফেলবে বলেও মনে করেন তারা।

ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে ফিরে আসা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে গ্রিনল্যান্ডের সাধারণ মানুষ।

এদিকে, সাধারণ মানুষ অখুশি হলেও যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে মদদ পাওয়া বিভিন্ন দেশের প্রধানরা স্বাগত জানাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইরান আর তার প্রতিরোধ অক্ষকে শেষ করতে ইসরাইল – যুক্তরাষ্ট্র সখ্যতা এবার অনন্য উচ্চতায় পৌঁছাবে।

সামরিক সহায়তা পাওয়ার আশায় বুক বেঁধে রাখা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও স্বাগত জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, পরমাণু অস্ত্র আর ইউক্রেনে সেনা অভিযানের বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা করতে চান তিনি।

নির্বাহী নানা আদেশ নিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়লেও ট্রাম্পকে স্বাগত জানিয়েছেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ঐতিহাসিক এই অংশীদারিত্বকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন তিনি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানান কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানেজ।

এএইচ