উত্তর আমেরিকা
বিদেশে এখন
0

ভিন্নমত পোষণকারীদের সাথে আলোচনায় বসতে ট্রাম্পের প্রতি ওবামার আহ্বান

প্রশাসনের সিদ্ধান্তে ভিন্নমত পোষণকারীদের সাথে বিরুদ্ধ আচরণ না করে আলোচনায় বসতে নতুন নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। গেল বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) ওবামা ফাউন্ডেশন আয়োজিত 'ডেমোক্রেসি ফোরাম' শীর্ষক সভায় সাবেক প্রেসিডেন্ট জোর দিয়ে জানান, গণতন্ত্র রক্ষায় সব দলের অংশগ্রহণ ও সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এদিকে চীনে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পদে জর্জিয়ার সিনেটর ডেভিড পার্ডুকে মনোনীত করেছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

গেল নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কামালা হ্যারিসের শোচনীয় হারের পর পাবলিক ফোরামে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।

বৃহস্পতিবার ওবামা ফাউন্ডেশনের ব্যানারে 'ডেমোক্রেসি ফোরাম' শীর্ষক সভায় বহুত্ববাদী নীতি বা 'প্লুরালিস্ট প্রিন্সিপাল' এবং অংশগ্রহণমূলক রাজনীতির গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন সাবেক প্রেসিডেন্ট। দাবি করেন, যারা মার্কিন রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হতে চান, তাদের বাদ দিয়ে গণতন্ত্র রক্ষা করা সম্ভব না।

বারাক ওবামা বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অনেকগুলো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছি। দল-মত নির্বিশেষে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার নতুন লক্ষ্য নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। একই নীতিতে আটকে থাকা, পরস্পরকে দোষারোপ, ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য সমর্থকদের ব্যবহার করে গণতন্ত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করার সংস্কৃতি থেকে বের হতে হবে।'

ব্যাটেলগ্রাউন্ড স্টেট থেকে শুরু করে পপুলার ভোট, কংগ্রেস থেকে সিনেট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কামালা হ্যারিসের পরাজয় স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয় নীল শিবিরে নেতৃত্বের বদল প্রয়োজন।

ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা মনে করেন তরুণদের মধ্যে নেতৃত্ব দেয়ার যে প্রবণতা সৃষ্টি হয়েছে, সেখানে ওবামার মতো একজন দূরদর্শী নেতা তরুণদের পথ দেখা পারেন। নির্বাচনে রিপাবলিকানদের জয়কে স্বাগত জানালেও একটি দলের একচ্ছত্র আধিপত্য ভিন্নমত পোষণকারীদের জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে আসতে পারে এমন আশঙ্কাও করেন সাবেক প্রেসিডেন্ট।

বারাক ওবামা বলেন, 'এমন একটি সময় আসতে পারে যখন একটি পক্ষ ক্ষমতার চূড়ান্ত দখল নিয়ে ফেলবে। ভোটারদের মুখ বন্ধ করা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয় নিয়ন্ত্রণে আনা এমনকি গোটা বিচার-ব্যবস্থাকে বিরোধীদের উৎখাতে ব্যবহার করা হতে পারে।'

এদিকে বেইজিং-ওয়াশিংটন দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আর চীনা পণ্যে আরোপিত ট্রাম্পের শুল্কনীতি নিয়ে যখন আন্তর্জাতিক অঙ্গন তোলপাড়, তখন চীনে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে জর্জিয়ার সিনেটর ডেভিড পার্ডুকে মনোনীত করেছেন ট্রাম্প।

বেইজিং এর সাথে ওয়াশিংটনের উত্তেজনা ও বিশ্বাস ভঙ্গের যে সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে ডেভিডের মতো অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী তা প্রশমন করতে সক্ষম হবেন বলে ট্রুথ সোশ্যালে উল্লেখ করছেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট।

ইলন মাস্কের পর আরেক টেক বিলিওনেয়ার ও পেপ্যাল চিফ অপারেটিং অফিসার ডেভিড স্যাকসকে প্রশাসনিক পদে নিয়োগ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প।

এআই ও ক্রিপ্টো জার পদে ডেভিড স্যাকসকে মনোনয়ন দিয়ে ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প উল্লেখ করেন, ক্রিপ্টো কারেন্সি খাতে একটি আইনি কাঠামো দাঁড় করানোর দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। এছাড়া হোমল্যান্ড সিকিউরিটি টিমে আরও লোকবল বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

'থ্যাংকস গিভিং ডে' এর আগে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম চূড়ান্তের ঘোষণা দিয়েছিলেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বৃহস্পতিবার যেসব প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছেন সেখানেও ব্যক্তিগত সম্পর্ককে প্রাধান্য দিয়েছেন তিনি।

মনোনীতদের অধিকাংশই ট্রাম্পের আগের শাসনামলে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেছেন। ব্যক্তি পছন্দে গড়া 'ট্রাম্প টু পয়েন্ট ও' মন্ত্রিসভা শেষ পর্যন্ত কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে যাচ্ছে তার হিসাব মিলবে আগামী চার বছরে।

এসএস