যুক্তরাষ্ট্রের ২০২০ সালের নির্বাচনে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিপক্ষ বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ভোট দিলেও গেলো সপ্তাহের নির্বাচনে ট্রাম্পকে শুধু প্রকাশ্য সমর্থনই জানাননি, তার হয়ে প্রচারণায় প্রায় বছরখানেক দিয়েছেন বিস্তর সময়। এমনকি ট্রাম্পকে ভোট দিলে লটারির মাধ্যমে ভোটারদের ১০ লাখ ডলার করে পুরস্কারও বিলিয়েছেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। এসবেরই পুরস্কার হিসেবে পেয়ে গেলেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের সরকারে আস্ত এক মন্ত্রণালয়।
ধনকুবের ইলন মাস্ককে নিয়োগ দিতে নতুন মন্ত্রণালয় খুলছেন ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি নামের এ মন্ত্রণালয়ে মাস্কের পাশাপাশি নেতৃত্ব দেবেন বেসরকারি খাতে সুপরিচিত আরেক নেতা, সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বিবেক রামাস্বোয়ামি। ট্রাম্প জানিয়েছেন, প্রচলিত নিয়মে সরকারের আওতার বাইরের বিষয়গুলো দেখবে নতুন এ মন্ত্রণালয়।
এদিকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার এক মাসের বেশি সময় বাকি থাকতেই স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র, হোয়াইট হাউজ চিফ অব স্টাফ, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং জাতিসংঘে নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূতের পর নতুন সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আর কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানের নামও ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প।
আনুগত্য ও বিশ্বস্ততায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী এমন ব্যক্তিদেরই সরকারে জায়গা দেবেন বলে বিগত মেয়াদের অনেক কর্মকর্তাকেই ফেলেছেন বাতিলের খাতায়। তালিকায় ব্যতিক্রম সিআইএ-প্রধান জন র্যাটক্লিফ, যার অধীনে ট্রাম্পের আগের মেয়াদে ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স।
এদিকে দায়িত্ব নেয়ার প্রথম দিনেই হোয়াইট হাউজে বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প স্বাক্ষর করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর, অভিবাসী নিয়ন্ত্রণে এবং প্রেসিডেন্ট বাইডেনের আলোচিত বৈধ প্রবেশ কর্মসূচি বাতিলে ব্যবস্থা নিতে পারেন নতুন প্রেসিডেন্ট। বিশ্লেষকরা বলছেন, গণপ্রত্যাবাসন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে গেছে চরম বাস্তবতা ও প্রতিকূলতার মুখে পড়তে হবে নতুন সরকারকে।
যুক্তরাষ্ট্রের টোডেক লিগ্যাল সেন্টারের অভিবাসন অ্যাটর্নি ক্লডিও কোরেন বলেন, 'বাস্তবতার চপেটাঘাত সামলাতে হবে সরকারকে। কী করতে পারবে আর কী করতে পারবে না, প্রথম দিনই বুঝে যাবে নতুন সরকার। হয়তো তাদের পরিকল্পনা আছে। কিন্তু কিছুই তারা বাস্তবে প্রয়োগ করতে পারবে বলে বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই।'
সমালোচকরা বলছেন, নির্বাহী পদক্ষেপের ফলে অপরাধের ইতিহাস না থাকলেও গ্রেপ্তারের ক্ষমতা থাকবে কেন্দ্রীয় অভিবাসন কর্মকর্তাদের, এতে গ্রেপ্তার বাড়বে। বাড়বে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে সেনা মোতায়েন এবং সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের কাজও ফের শুরু হবে।
এদিকে নতুন প্রশাসনে মার্কিন পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাচ্ছে রিপাবলিকান পার্টি। নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পথে রক্ষণশীলরা। নির্বাচনের এক সপ্তাহ পেরিয়ে এখনও চলছে ভোটগণনা।