নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই সমর্থন বাড়ছে কামালা হ্যারিসের প্রতি। ডেমোক্র্যাট প্রার্থীকে গেল মাসে সমর্থন দেন সাবেক রিপাবলিকান ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনি ও তার মেয়ে লিজ চেনি। এবার উইসকসিনে এক সভায় অংশ নিয়ে কামালার প্রতি নিজের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন লিজ।
রিপাবলিকান পার্টির সাবেক আইন প্রণেতা ডোনাল্ড ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডকে অনৈতিক হিসেবে অভিহিত করেন। জানান, জীবনে প্রথমবার ডেমোক্র্যাট প্রার্থীকে ভোট দিতে যাচ্ছেন তিনি। ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র হত্যা করতে চান বলেও অভিযোগ করেন লিজ চেনি।
সাবেক রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা লিজ চেনি বলেন, '১৯৮৪ সালে আমার প্রথম ভোটটি রোনাল্ড রিগানকে দেই। আমি বুশ প্রশাসনে কাজ করেছি। তিনবার প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য ছিলাম। এমনকি রিপাবলিকানদের তৃতীয় সর্বোচ্চ পদও সামলেছি। তাই বলা যেতেই পারে, ট্রাম্পের রাজনীতিতে আসার আগ থেকেই আমি রিপাবলিকের হয়ে রাজনীতি করছি।'
একই সভায় ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জানান, যারা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানকে বাতিল করার কথা বলেন, তাদের হোয়াইট হাউজে যাবার কোনো অধিকার নেই।
ডেমোক্রেটিক পার্টি প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কামালা হ্যারিস বলেন, 'ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো যারা শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরে বাধা প্রদান করতে চায়, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানকে বাতিল করতে চায়, তাদের আবারও আমরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট খোদাইকৃত সিলের পেছনে দাঁড়ানো অবস্থায় দেখতে চাই না।'
এদিকে মিশিগানে এক নির্বাচনী সভায় বক্তব্য রাখেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জানান, তিনি নির্বাচিত হলে কোনো অঙ্গরাজ্য জ্বালানি গ্যাস চালিত গাড়ি নিষিদ্ধ করতে পারবে না। ইস্পাত প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ইউএস স্টিলকে প্রায় ১৫শ কোটি ডলারে নিপ্পন স্টিল কিনে নেয়ার সিদ্ধান্তকে কর্তৃপক্ষ বৈধতা দিলেও ট্রাম্প জানান, প্রতিষ্ঠান বিক্রি ঠেকাতে সবকিছুই করতে প্রস্তুত তিনি।
রিপাবলিকান পার্টি প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, 'আমি ইউএস স্টিলকে বিক্রি হতে দিবো না। ভালোর জন্য হলেও আমি এই সিদ্ধান্ত পরোয়া করি না। ৬৫ থেকে ৭০ বছর আগে বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্পাত নির্মাতা ছিল ইউএস স্টিল। এখন জাপান কিনতে চাচ্ছে। আমি এটি হতে দিতে পারি না।'
সম্প্রতি ২০২০ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফল উল্টে দেয়ার ঘটনায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলার নতুন প্রমাণাদিসহ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি। ১৬৫ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে রয়েছে ট্রাম্পকে ফল মেনে নিতে তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্টের আহ্বানসহ বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর নথি। বিশ্লেষকদের ধারণা, সরকারি দায়িত্বের বাইরে থেকে ট্রাম্প ফল উল্টে দেয়ার চেষ্টা করেছেন, বিষয়টি প্রমাণ করা সম্ভব হলে বিপদে পড়তে পারেন রিপাবলিকান প্রার্থী।
ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি ল স্কুলের অধ্যাপক পল শিফ বারম্যান বলেন, 'বিভ্রান্তি তৈরির মাধ্যমে গণতন্ত্র ধ্বংসের যে চেষ্টা চালানো হয়েছে, তা যদি সরকারি দায়িত্বের বাইরে থেকে করা হয়, সেক্ষেত্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়মুক্তির বাইরে থাকবেন। অর্থাৎ তার বিরুদ্ধে মামলা চলতে বাধা থাকবে না। নির্বাচনের আগে না হলেও নির্বাচনের পরে ট্রাম্পকে ভোগান্তি পোহাতে হতে পারে।'
এদিকে নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে গর্ভপাত প্রসঙ্গে স্বামীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেন ট্রাম্পের স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প। এক ভিডিওবার্তায় মেলানিয়া জানান, গর্ভপাতের স্বাধীনতার প্রশ্নে আপোসের কোনো স্থান নেই।
অন্যদিকে কিংবদন্তি মার্কিন সংগীতশিল্পী ব্রুস স্প্রিংস্টিনও ইন্সটাগ্রামে এক ভিডিওবার্তায় সমর্থন দিয়েছেন কামালা হ্যারিসের প্রতি।