যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনের আগে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রার্থিতা নিয়ে তুমুল সমালোচনার জেরে রীতিমতো অগ্নিপরীক্ষার মুখোমুখি হয় ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। সেই সুযোগে বিরোধী নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্পের একের পর এক মন্তব্যে ভাটার টান লাগে ক্ষমতাসীন শিবিরে। চাপে পড়ে ভোটের লড়াই থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন বাইডেন। প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে উঠে আসে কামালা হ্যারিসের নাম। এতেই সমর্থনের জোয়ার ভাসছে ডেমোক্র্যাটরা।
দল থেকে চূড়ান্তভাবে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছেন বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিস। এক সপ্তাহে নিজের নেতৃত্ব সক্ষমতার সর্বোচ্চ দেখিয়েছেন তিনি। অল্প সময়ের মধ্যে দলের নির্বাচনী তহবিলের জন্য জোগাড় করেছেন ২০ কোটি ডলার। এর মধ্যে ৩৬ ঘণ্টায় সংগ্রহ করেছেন ১০ কোটি ডলালের বেশি। জানা গেছে, দাতাদের ৬৬ শতাংশই নতুন। একইসময় কামালার নির্বাচনী শিবিরে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে যুক্ত হয়েছেন ১ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন নাগরিক। বিপরীতে ট্রাম্পের প্রচারণা শিবিরে গত এক সপ্তাহে কি পরিমাণ অর্থ জমা পড়েছে তা সামনে আসেনি। তবে সবশেষ তথ্যের হিসেবে, তহবিল সংগ্রহে রিপাবলিকানদের চেয়ে এখন এগিয়ে আছে ডেমোক্র্যাটরা।
এ অবস্থায় ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন কামালা হ্যারিস। বিতর্কের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন রিপাবলিকান নেতাকে। বলেন, জনগণই তার প্রচারের মূল শক্তি। এর উপর ভর করেই পৌঁছে যাবেন হোয়াইট হাউজের অন্দরে। মিথ্যা বলে তাকে ঠেকাতে পারবেন না ট্রাম্প।
কামলা হ্যারিস বলেন, 'আমি বিশ্বাস করি যে এই নির্বাচনে আমাদের প্রত্যেকে একটি প্রশ্নের সম্মুখীন হবেন। প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা কোন দেশে থাকতে চাই? আমরা কি স্বাধীনতা, সহানুভূতি ও আইনের শাসনের দেশে বাস করতে চাই? নাকি বিশৃঙ্খলা, ভয় ও ঘৃণার দেশ? আমাদের গণতন্ত্রের সৌন্দর্য হল আমাদের প্রত্যেকের সেই প্রশ্নের উত্তর দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে। আর আমি যে ক্ষমতা বলি সেটা জনগণের কাছে। ক্ষমতা জনগণের।'
এদিকে কামালাকে নিয়ে আরও বেশি সমালোচনায় মেতেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্ষমতায় এলে কামালা দেশকে ধ্বংস করে ছাড়বেন, এমনকি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধও বেধে যেতে পারে বলে মন্তব্য তার।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, 'কামালা হ্যারিস প্রেসিডেন্ট হলে আরও চার বছর চরমপন্থা, অর্থনৈতিক দুর্বলতা, ব্যর্থতা ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি বাড়তে পারে। এমনকি সম্ভবত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধও শুরু হতে পারে। আমি সত্যিই এটি বিশ্বাস করি। তারা আছে বলেই এসব ঘটছে।'
ডেমোক্র্যাট দল থেকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন চূড়ান্ত হবে আগস্টে। তবে হ্যারিসের টেকওভারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই দলের প্রচারাভিযানে গতি বেড়েছে, তাই প্রার্থী হিসেবে তার সম্ভাবনাও বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।