ভঙ্গুর হলেও গাজায় চলমান অস্ত্রবিরতি কার্যকর রয়েছে প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে। কিন্তু থামছে না ইসরাইলি আগ্রাসন। অবরুদ্ধ উপত্যকার দক্ষিণের শহর খান ইউনিসের কাছে ড্রোন হামলা চালিয়ে জারি রাখা হয় ফিলিস্তিনি হত্যাযজ্ঞ।
অবরুদ্ধ পশ্চিম তীরজুড়েও দখলদার বাহিনীর আগ্রাসন চলছেই। জেনিনের কাছে একটি গ্রামে বিমান হামলা চালিয়ে কয়েকজনকে হত্যাসহ চারটি গ্রাম ও রামাল্লাহ'র জালাজোন, নাবলুসের কাছে বালাতা ও আস্কারসহ তিনটি শরণার্থী শিবিরে ব্যাপক ধরপাকড় আর তল্লাশির নামে ঘরে ঘরে ভাঙচুর চালায় ইসরাইলি সেনারা। উত্তরের জর্ডান ভ্যালির বিভিন্ন কৃষিজমি আর সেচব্যবস্থা ধ্বংস করে দেয় অবৈধ বসতি স্থাপনকারী ইহুদিবাদীরা।
অস্ত্রবিরতির পর গাজা শান্তি পরিকল্পনার পরবর্তী ধাপে এগোতে ইসরাইলকে চাপ দেয়া অব্যাহত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে তেল আবিবের সবচেয়ে বড় সমর্থক হিসেবে প্রতিবেশীদের ওপর আরোপিত যুদ্ধের জন্য ইসরাইলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে আগ্রহী নয় মার্কিন প্রশাসন।
পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি বিশ্লেষক খালদোন আর বারগোথি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের বিষয় হলো, পশ্চিম তীরে চলমান উত্তেজনার আঁচ যেন গাজার অস্ত্রবিরতিতে প্রভাব না ফেলে। পশ্চিম তীর আত্মসাতের যৌক্তিকতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো মাথাব্যথা নেই। পশ্চিম তীর আত্মসাতে ইসরাইলের বিরোধিতাও করে না যুক্তরাষ্ট্র। এখন সঠিক সময় নয়, এতটুকুই মনে করে দেশটি।’
আরও পড়ুন:
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড শুধু নয়, বিরতি দিয়ে ইসরাইলি হামলা চলছে লেবানন-সিরিয়াসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতেও। আঞ্চলিক অস্থিরতার মধ্যেই বিশ্ব রাজনীতির অধিপতি যুক্তরাষ্ট্রের সকল মনোযোগ গাজায়। অস্ত্রবিরতির স্থায়িত্ব নিশ্চিতে গাজার শাসকদল হামাসকে নিরস্ত্রীকরণের পর উপত্যকার দেখভালে আন্তর্জাতিক বাহিনী চান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আরব রাষ্ট্রগুলো বা অন্যান্য দেশ এতে প্রস্তুত কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ বন্ধের পরিকল্পনার অধীনে গাজায় তুর্কি সেনাবাহিনীর উপস্থিতি মেনে নেবে না বলে জানিয়েছে ইসরাইল। এককালে উষ্ণ থাকলেও গাজায় রক্তক্ষয়ী আগ্রাসনের জেরে তুরস্কের সাথে সম্পর্কে ফাটল ধরে ইসরাইলের।
ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সার বলেন, ‘তুরস্কের প্রসঙ্গ এলে কেন আমরা গাজায় তুর্কি সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণের বিরুদ্ধে? আমি বলবো, যেসব দেশ ইতোমধ্যে সশস্ত্র বাহিনী পাঠাতে চায়, তাদের অন্তত ইসরায়েলের প্রতি ন্যায্য আচরণ করা উচিত। অনেক সমর্থন চাই না তাদের। কিন্তু তাই বলে ইসরাইলের প্রতি এতোটা শত্রুতাপূর্ণ হওয়াও উচিত নয়।’
এদিকে ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংকটের দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের লক্ষ্যে রিয়াদে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করেছে সৌদি আরব।
অন্যদিকে ১২ জিম্মির মরদেহ ফিরিয়ে দিতে চাপ বাড়তে থাকায় আরও এক জিম্মির দেহাবশেষ ইসরাইলকে ফেরত দিয়েছে হামাস। চলছে পরিচয় শনাক্তের প্রক্রিয়া। খান ইউনিসে ভারী ভারী সরঞ্জাম দিয়ে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে চলছে বাকিদের মরদেহের খোঁজ।





