মধ্যপ্রাচ্য
বিদেশে এখন
0

যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি: প্রথম ধাপে ৭৩৫ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল

নানা জল্পনা শেষে গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি অনুমোদন দিয়েছে ইসরাইলি মন্ত্রিসভা। ফলে রোববার থেকে কার্যকর হচ্ছে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ। ৬ সপ্তাহের যুদ্ধবিরতিতে ৩৩ ইসরাইলি জিম্মির বদলে ৭শ ৩৫ ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে বিনিময় করা হবে। চুক্তির ফলে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

দীর্ঘ ৬ ঘণ্টার আলোচনা শেষে ভোটাভুটি। অবশেষে মিলল কাঙ্ক্ষিত অনুমোদন। শুক্রবার মধ্যরাতে গাজা যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি অনুমোদন দিয়েছে ইসরাইলি মন্ত্রিসভা। ফলে রোববার থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকরে কোনো বাধা থাকলো না।

কট্টর মন্ত্রীদের বাধার মুখে অনুমোদন আটকে যাবার শঙ্কা ছিল। তবে ৩২ জনের মন্ত্রিসভায় ২৪-০৮ ভোটে পাস হয় প্রস্তাব। এর আগে শুক্রবার সকালে কাতারের রাজধানী দোহায় বন্দি বিনিময় চুক্তিতে সই করে দুইপক্ষ। জাতির স্বার্থে যুদ্ধের বদলে জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়া মন্ত্রীরা।

ইসরাইলের সংস্কৃতি ও ক্রীড়া বিষয়ক মন্ত্রী মিকি জোহার বলেন, ‘কঠিন সিদ্ধান্ত হলেও আমরা প্রস্তাবকে সমর্থন করছি। কারণ আমাদের নাগরিকদের ঘরে ফিরিয়ে আনা জরুরি। আশা করছি সামনে গাজায় আমাদের অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করতে পারবো।’

ইসরাইলের আবাসন বিষয়ক মন্ত্রী ইজহাক ইসাচার গোল্ডনফ বলেন, ‘আমরা জিম্মিদের মুক্তির জন্য চুক্তিকে সমর্থন দিয়েছে। সকল পরিমার্জন শেষে এ বিষয়ে রাজি হয়েছি। যেহেতু মন্ত্রিসভায় চুক্তি অনুমোদন হয়ে গেছে, আশা করি কালকের মধ্যে সবাই ঘরে ফিরে আসবে।’

চুক্তি অনুযায়ী তিন ধাপে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্ব ৪২ দিন। এসময় মুক্তি দেয়া হবে ৩৩ ইসরাইলি জিম্মিকে। অন্যদিকে ইসরাইল থেকে মুক্তি পাবেন ৭৩৫ কারাবন্দি ফিলিস্তিনি।

এছাড়াও এসময় প্রতিদিন ৬০০ ট্রাক বোঝাই মানবিক সাহায্য প্রবেশ করবে গাজায়। প্রথম ধাপের সফলতার ওপর নির্ভর করবে দ্বিতীয় ধাপ। যেখানে বাকি জিম্মিদের মুক্তির পাশাপাশি উপত্যকা থেকে সকল ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার করা হবে। তৃতীয় ধাপের শর্তে রয়েছে ৩ থেকে ৫ বছর মেয়াদি গাজার পুনর্গঠন পরিকল্পনা।

যুদ্ধবিরতি প্রসঙ্গে কথা বলেছেন ভ্লাদিমির পুতিন। ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক শেষে রুশ প্রেসিডেন্ট জানান, চুক্তির ফলে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে। যুদ্ধবিরতির ফলে উপত্যকায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানো সহজ হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

রাশিয়া প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তির ফলে দীর্ঘদিন পর আটককৃতরা নিজ দেশে ফিরতে পারবে। পাশাপাশি গাজায় খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের মতো ব্যাপক মানবিক সহায়তা সরবরাহ সম্ভব। আশা করছি চুক্তির মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।’

২০২৩ সালে ৭ অক্টোবর শুরু হয় হামাস ইসরাইল যুদ্ধ। সে বছর নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে ৭ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তবে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগে আবারো উপত্যকায় আগ্রাসন শুরু করে ইসরাইল।

এএম